
‘শরবত জেহাদ’ মন্তব্যের জেরে ফের আদালতের তোপের মুখে পড়লেন যোগগুরু বাবা রামদেব। কয়েকদিন আগেই তিনি দাবি করেছিলেন, ভারতের জনপ্রিয় শরবতের কোম্পানি রুহ আফজা শরবত বিক্রির অর্থে মাদ্রাসা, মসজিদ বানাচ্ছে। এটিকে ‘শরবত জেহাদ’ বলে অ্যাখ্যা দেন। সেই মন্তব্যকেই তোপ দাগল দিল্লি হাইকোর্ট। দিল্লি হাইকোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার পর ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানাল রামদেবের আইনজীবী।
সম্প্রতি নিজের ব্র্যান্ড পতঞ্জলির এক শরবতের প্রচার করতে গিয়ে রুহ আফজাকে সরাসরি আক্রমণ করেন রামদেব। ‘পতঞ্জলি প্রোডাক্টস’ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় তিনি দাবি করেছিলেন, একটি প্রতিযোগী শরবত সংস্থার আয় মাদ্রাসা এবং মসজিদ তহবিলে ব্যবহার করা হচ্ছে। পালটা আমাদের শরবতের বিক্রি করা টাকা কাজে আসবে গুরুকুল, আচার্যকুল, পতঞ্জলি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভারতীয় শিক্ষা বোর্ডের উন্নতিকল্পে।
ভিডিওর ক্যাপশনে ‘লাভ জেহাদ’, ‘ভোট জেহাদে’র প্রসঙ্গ টেনে ‘শরবত জেহাদে’র কথা লেখা হয়। লেখা হয়, “আপনার পরিবার এবং নিষ্পাপ শিশুদের কোল্ড ড্রিঙ্কস এবং ‘শরবত জিহাদে’র নামে বিক্রি হওয়া টয়লেট ক্লিনারের বিষ থেকে রক্ষা করুন। বাড়িতে কেবল পতঞ্জলির শরবত এবং জুস আনুন।”
যদিও রামদেব কারও নাম উল্লেখ করেননি, তবে তাঁর নিশানায় যে অত্যন্ত জনপ্রিয় শরবতের কোম্পানি রুহ আফজা রয়েছে, তা বোঝাই যায়। যোগগুরুর এহেন মন্তব্যের পর রুহ আফজার নির্মাতা হামদর্দ কোম্পানি দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বাবা রামদেবকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারক অমিত বানসল। তিনি বলেন, "ভিডিওটি দেখে আমি নিজের কান এবং চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না।" আদালতের মন্তব্য, রামদেবের এমন মন্তব্যের পক্ষে কোনও যুক্তিই খাড়া করা যায় না। আদালতের বিবেক এবং নীতিবোধ ধাক্কা খায় এমন মন্তব্য।
আদালতের ভর্ৎসনার পর আগামী পাঁচদিনের মধ্যে রামদেবের ওই মন্তব্যের সমস্ত বিজ্ঞাপন ও ভিডিও তুলে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁর আইনজীবী। যদিও এতে সন্তুষ্ট নয় দিল্লি হাইকোর্ট। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, পুরো বিষয়টিতে একটি হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১ মে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন