দু'বছরের সাজা ঘোষণা হওয়ার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ বাতিল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গোটা ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে।
রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণার ঘটনায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। বৃহস্পতিবার, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘কাপুরুষ, স্বৈরাচারী বিজেপি সরকার। রাহুল গান্ধী এবং বিরোধীরা তাঁদের (বিজেপির) কুকর্ম সামনে এনেছে এবং জেপিসির দাবি তুলেছে। কিন্তু, রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের শিকার হয়ে ইডি, পুলিশ পাঠাচ্ছে মোদী সরকার। রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়ে মামলা চাপাচ্ছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
এই ইস্যুতে মোদী সরকারকে নিশানা করেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র বিপন্ন’।
বৃহস্পতিবার, ‘মোদী পদবি’ মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁকে ২ বছরের জেলের সাজা শুনিয়েছে গুজরাটের সুরাতের একটি আদালত।
জানা যাচ্ছে, সুরাত আদালতের এই রায় যদি উচ্চ আদালতও বহাল রাখে, তাহলে সাংসদ পদ খোয়াতে পারেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী! এমনকি, আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করতে পারবেন না তিনি।
১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী - কোনও ব্যক্তি যদি দোষী সাব্যস্ত হন, এবং দুই বা তার বেশি সময় কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন, তাহলে তিনি অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। বাতিল হবে সদস্যপদ। কারাবাসের মেয়াদ ছাড়াও আরও ৬ বছর তিনি কোনও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।
তবে, এই আইনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ক্ষেত্রে কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। আইনে বলা আছে - ‘নির্বাচিত সদস্যদের জন্য একটি ব্যতিক্রম রয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আপিল করার জন্য তাঁরা ৩ মাস সময় পাবেন। আর, আপিলের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত সদস্যপদ খারিজ হবে না।’
যদিও এই বিষয়ে কংগ্রেস সাংসদকে স্বস্তি দিতে পারে লাক্ষাদ্বীপের একটি ঘটনা। গত জানুয়ারি মাসে এনসিপি সাংসদ পি পি মহম্মদ ফয়জলকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে লাক্ষাদ্বীপের আদালত প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত করে এবং তাঁর সাংসদপদ খারিজের নির্দেশ দেয়। কিন্তু এক সপ্তাহ পরে কেরালা হাইকোর্ট সেই রায় খারিজ করে দেয়। যদিও ইতিমধ্যেই ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন ঘোষণা করে দেয় নির্বাচন কমিশন। যে নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পি পি মহম্মদ ফয়জল।
বৃহস্পতিবার, সুরাতের আদালত রাহুলের ২ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনালেও, তাঁর জামিনও মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি। একইসঙ্গে, কারাদণ্ডের নির্দেশের বিরুদ্ধে আপিল করার জন্য তাঁর সাজা ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্ণাটকের কোলারে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়ে ঋণ খেলাপিতে অভিযুক্ত পলাতক ব্যবসায়ী ললিত মোদী এবং নীরব মোদীর নাম ব্যবহার করে রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, 'সব চোরদের 'পদবী' মোদী কেন হয়?'
রাহুল গান্ধীর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন গুজরাটের বিজেপি বিধায়ক পূর্নেশ মোদী। সেই মামলায় আজ রাহুল গান্ধীকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। এই ধারার অধীনে সর্বোচ্চ শাস্তি দুই বছরের জেল।
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন