

নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন নিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করেছে বিরোধীরা। বৃহস্পতিবার, মোদীর নাম না নিয়েই কংগ্রেস বলেছে, ‘এক ব্যক্তির অহংকার এবং স্ব-উন্নতির আকাঙ্ক্ষা’র জন্য প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক বিশেষাধিকারকে অস্বীকার করা হচ্ছে।
গতকালই, নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা করেছে কংগ্রেস, বাম, টিএমসি, এসপি, আপ সহ ১৯ টি বিরোধী দল। এক বিবৃতিতে সকলে জানিয়েছে, ‘যখন সংসদ থেকে গণতন্ত্রের আত্মাকেই শুষে নেওয়া হয়েছে, তখন এই নতুন বিল্ডিংয়ের কোনও দাম নেই আমাদের কাছে।’
পাশাপাশি ২৮ মে সংসদ ভবন উদ্বোধন করা নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে বিরোধীরা। সংবিধানের প্রণেতা ভীমরাও আম্বেদকরকে বাদ দিয়ে, হিন্দুত্ববাদের প্রবক্তা সাভারকরের জন্মদিন (২৮ মে)-কে কেন উদ্বোধনের দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
পাশাপাশি, AIMIM প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা যদি নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন না করেন, তাহলে তাঁর দল এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না।
আজ, এক টুইটে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেছেন, ‘গতকাল, রাঁচিতে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট কমপ্লেক্সে দেশের বৃহত্তম বিচার বিভাগীয় ক্যাম্পাসের উদ্বোধন করেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু৷ একজন পুরুষের অহং এবং শুধুমাত্র নিজের লাভের আকাঙ্ক্ষার জন্য, ২৮ মে নয়াদিল্লিতে, দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতিকে তাঁর নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন করার সাংবিধানিক বিশেষাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’ এরপরে মোদীকে আরও কটাক্ষ করে তিনি লিখেছেন – ‘অশোক দ্য গ্রেট, আকবর দ্য গ্রেট, মোদী দ্য উদ্বোধনী’।
গতকাল ১৯ টি বিরোধী দলের প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে এই প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে সম্পূর্ণভাবে সাইডলাইন করে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, তা আমাদের গণতন্ত্রের অপমান ও তার উপর আক্রমণও বটে। দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা হিসাবে দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি করার সময়ে দেশের মানুষ যে উদযাপন করেছে, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তাকেও খাটো করা হলো।’
একইসঙ্গে, এই বিষয়ে সরব হয়েছে সিপিআই(এম)। বুধবার, দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি টুইটারে লিখেছেন, 'সংসদ ভবনের উদ্বোধন করবেন মোদী! ভারতের রাষ্ট্রপতি কেবল প্রজাতন্ত্রের প্রধান নন, সংসদেরও প্রধান। প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারের নির্বাহী প্রধান, আইনসভার প্রধান নন।'
এর আগে তিনি বলেছিলেন 'ভারতের রাষ্ট্রপতি যখন অধিবেশন ডাকেন, একমাত্র তখনই সংসদ বসতে পারে। রাষ্ট্রপতিই যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিয়ে বার্ষিক সংসদীয় কার্যক্রম শুরু করেন। তার ভাষণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েই প্রতিবছর সংসদের কাজ শুরু হয়।'
ইয়েচুরির বলেন, 'নতুন সংসদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানেও রাষ্ট্রপতিকে এড়িয়ে গিয়েছিলেন মোদী, এখন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও তাই করছেন তিনি। এটা 'অগ্রহণযোগ্য'।'
তিনি জানান, 'সংবিধানের ৭৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, সংসদের দুটি কক্ষ – উচ্চকক্ষ রাজ্যসভা, নিম্নকক্ষ লোকসভা এবং রাষ্ট্রপতি - এই তিনে মিলেই সংসদ।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন