
টিকাকরণ নিয়ে বিরোধীদের সুরে সুর মেলালেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি। দেশে কোভিড টিকার ঘাটতি মেটানোর জন্য আরো একাধিক সংস্থাকে টিকা তৈরির লাইসেন্স দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই দাবি জানাচ্ছে কংগ্রেস সহ সমস্ত বিরোধী দলগুলো। এবার তাঁরই মন্ত্রিসভার এক শীর্ষ সদস্য এই দাবি তোলায় কটাক্ষ করেছে কংগ্রেসও।
গত বেশ কয়েকদিন ধরেই দেশে টিকার আকাল দেখা দিয়েছে। সরকার ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়ার নির্দেশ দিলেও, টিকার অভাবে অধিকাংশ রাজ্যে তা চালুই হয়নি। এমনকি কিছু জায়গায় ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বেও টিকাকরণ বন্ধ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের সাথে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে কেন্দ্রীয় পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি বলেন, "সরবরাহের চেয়ে চাহিদা যদি অনেক বেশি হয়, তাহলে তা সমস্যার সৃষ্টি করবেই। সেক্ষেত্রে একের পরিবর্তে দশটি কোম্পানিকে ভ্যাকসিন তৈরির লাইসেন্স দেওয়া উচিত।"
এর আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সহ অনেকেই সরকারের কাছে এই একই দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু সরকার এই দাবিকে কোনো গুরুত্বই দেয়নি।
নীতিন গড়কড়ি বলেন, "আমি নিশ্চিত প্রতি রাজ্যে এরকম দু-তিনটি ল্যাব রয়েছে, যাদের টিকা তৈরির সামর্থ্য ও পরিকাঠামো রয়েছে। উৎপাদন বাড়াতে এই ল্যাবগুলোর সাথে ফর্মুলা শেয়ার করা হোক এবং এদের সহযোগিতা করা হোক। এরা গোটা দেশে টিকা সরবরাহ করুক এবং পরে টিকা যদি উদ্বৃত্ত হয় তাহলে তা বিদেশেও রফতানি করা যাবে। ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে এটা করতে হবে। ভ্যাকসিনের ঘাটতি মেটাতে এটা করতে হবে।"
গড়কড়ির এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সিনিয়র কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। এপ্রিল মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের চিঠির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "১৮ এপ্রিল ডঃ মনমোহন সিং ঠিক এই কথাই বলেছিলেন। কিন্তু তাঁর (নীতিন গড়কড়ি) বস কি এটা শুনেছেন?"
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪ কোটি লোক তাঁদের দুটি ডোজের টিকা পেয়েছেন। প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছেন ১৪১ মিলিয়ন দেশবাসী, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন