
নীতি আয়োগের একটি রিপোর্টের ম্যাপে বিহারকে দেখানো হচ্ছে বাংলা হিসেবে। বাংলা সংক্রান্ত নীতি আয়োগের রিপোর্টের যে প্রচ্ছদ তৈরি হয়েছে সেই প্রচ্ছদের ম্যাপেই এহেন বিরাট বিভ্রাট সামনে এসেছে। এই ঘটনায় অসন্তুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলে নীতি আয়োগকে চিঠি পাঠালেন তিনি। অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে শাসকদল তৃণমূলও।
নীতি আয়োগের ওয়েবসাইটে ‘সামারি রিপোর্ট ফর দ্য স্টেট অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নামে চার পাতার একটি নথি রয়েছে। রিপোর্টের প্রচ্ছদে ভারতের মানচিত্রে বিহারকে বাংলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের এমন ভুলকে কোনও সাধারণ ত্রুটি হিসাবে দেখতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, এর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের পরিচয় এবং মর্যাদাকে অপমান করা হয়েছে।
বুধবার নীতি আয়োগের সহ-সভাপতি সুমন কে বেরিকে পাঠানো চিঠিতে এই ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নীতি আয়োগের কাজের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। অবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে রিপোর্টটি সংশোধন করার কথা বলেছেন তিনি।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "গুরুত্বপূর্ণ একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সরকারি নথিতে এমন একটি গুরুতর ভুল শুধুমাত্র কোনও প্রযুক্তিগত ত্রুটি নয়। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গের পরিচয় এবং মর্যাদাকে অপমান করা হয়েছে। নীতি আয়োগের সরকারি নথিতে এই ধরনের সাংঘাতিক ভুল মনোযোগ এবং রাজ্যগুলির প্রতি সম্মানের অভাবকেই প্রতিফলিত করে।”
নীতি আয়োগের ওই রিপোর্ট নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলেও। রিপোর্টের একটি স্ক্রিনশট নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করে তাঁর প্রশ্ন, “কেন্দ্র সরকার বাংলাকে মানচিত্রের সঠিক জায়গাতেই রাখতে জানে না। এটা লজ্জাজনক। বাংলা থেকে ওদের ১২ জন সাংসদ আছে, দু’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাও নির্লজ্জভাবে ওরা বিহারকে বাংলা হিসাবে দেখিয়েছে"।
সাকেত আরও লিখেছেন, “বিজেপি যেখানে যেখানে ক্ষমতায় আছে সব রাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থা করছে। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে নির্বাচনে হারার ভয়ে বাংলায় এনআরসি করার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু আপনাদের সরকার এবং দল যেভাবে নিয়মিত বাংলাকে অপমান করছে, সেটা আমরা বরদাস্ত করব না"।
এই নিয়ে তৃণমূল সাংসদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সেটা না হলে বাংলার এই অপমান দীর্ঘদিন বিজেপি দলকে ভোগাবে। তবে এই বিভ্রাট সামনে আসার পর থেকে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র বা নীতি আয়োগের তরফ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন