আগামী বছর আরও কঠিন, বৃদ্ধি বাড়বে সেরকম কিছুই করেনি সরকার: রঘুরাম রাজন

রঘুরাম বলেন, 'এই বছরের চেয়ে আরও কঠিন হতে চলেছে আগামী বছর। আমরা প্রকৃতপক্ষে এমন কোনও অর্থনৈতিক সংস্কার করিনি যা প্রবৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।’
আগামী বছর আরও কঠিন, বৃদ্ধি বাড়বে সেরকম কিছুই করেনি সরকার: রঘুরাম রাজন

'আগামী বছর যদি ভারতের প্রবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ হয়, তাহলে আমরা ভাগ্যবান।' বৃহস্পতিবার, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কথাপোকথনের মাঝে এই মন্তব্য করেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গভর্নর রুঘুরাম রাজন।

ভারতীয় অর্থনীতি নিয়ে রাহুলের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় রঘুরাম বলেন, 'এই বছরের চেয়ে আরও কঠিন হতে চলেছে আগামী বছর। অবশ্যই, যুদ্ধ এবং অন্যান্য আরও বেশ কিছু কারণে অনেক অসুবিধা হয়েছে। বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীর গতিতে চলেছে। কারণ, মানুষ সুদের হার বাড়াচ্ছে যা প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দেয়।'

তিনি বলেন, 'আপনি যদি ২০১৯-এর তুলনায় ২০২২-র দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন প্রবৃদ্ধির হার বছরে মাত্র ২ শতাংশ ছিল। যা ভারতের জন্য খুবই কম।'

কিন্তু কেন এই অবস্থা? রাহুল গান্ধীর প্রশ্নের জবাবে রুঘুরাম রাজন বলেন, ‘কোভিড সমস্যা ছিল, তবে ভারতের অর্থনীতি তার আগে থেকেই মন্থর ছিল। আমরা ৯ থেকে ৫-এ পৌঁছেছি। আমরা প্রকৃতপক্ষে এমন কোনও অর্থনৈতিক সংস্কার করিনি যা প্রবৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।’

রাহুল গান্ধী তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, 'একটা জিনিস ঘটছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাত্র ৪-৫ জন ব্যক্তি ধনী থেকে আরও ধনী হচ্ছেন। ওই ধনীরা যে কোনও ব্যবসায় যেতে পারছেন। আর, বাকী লোকেরা আরও পিছনের দিকে চলে যাচ্ছেন। কৃষক, গরীবরা একটি নতুন ভারত তৈরি করেছেন। এই ৪-৫ জনের স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে, আর বাকিদের স্বপ্ন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই বৈষম্য নিয়ে আমাদের কী করা উচিত?'

উত্তরে রাজন বলেন, 'এটি একটি বড় সমস্যা। এটি শুধু শিল্পের বিষয়ে নয়।' অর্থনীতিবিদ বলেন, 'মহামারী চলাকালীন উচ্চ-মধ্যবিত্তরা লাভ করেছে কারণ তারা কাজ করতে পেরেছে। অন্যদিকে, মহামারীর সময় দরিদ্রদের কাজের জায়গা, কারখানাগুলি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই বিভাজন মহামারী চলাকালীন বেড়েছে।'

রাজন বলেন, 'অতি দরিদ্ররা রেশন পান। অন্যদিকে, ধনীদের কোনও অসুবিধায় পড়তে হয় না। আর, যারা নিম্ন মধ্যবিত্ত তাঁদের অনেক কিছু হারাতে হয়েছে। তাঁরা তাঁদের চাকরি হারিয়েছে। বেকারত্ব বেড়েছে। ঋণ বেড়ে গেছে। আমাদের তাঁদের দিকে তাকানো উচিত। কারণ তাঁরা অনেক কষ্টে আছেন।'

শিল্পপতিদের মধ্যে সম্পদের কেন্দ্রীকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের দিকেও আমাদের নজর দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, 'আমরা পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে হতে পারিনি। তবে আমাদের প্রতিযোগিতার জন্য লড়াই করা উচিত। আমরা 'একচেটিয়া বিরোধী' হতে পারি। কিন্তু এই একচেটিয়া দেশের জন্য ভালো নয়।'

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in