Maharashtra: লোকসভা ভোটের ৫ মাসের মধ্যে মহারাষ্ট্রে ৩৯ লাখ নতুন ভোটার! গুরুতর অভিযোগ কংগ্রেসের

People's Reporter: রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচন পরবর্তী পাঁচ মাসে মহারাষ্ট্রে ৩৯ লক্ষ ভোটারের নাম যুক্ত হয়েছে। যা অবিশ্বাস্য। কারণ গত ৫ বছরে মহারাষ্ট্রে নতুন ভোটার নথিভুক্ত হয়েছিল ৩২ লক্ষ।
সঞ্জয় রাউথ এবং রাহুল গান্ধী
সঞ্জয় রাউথ এবং রাহুল গান্ধী
Published on

মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর না পেলেও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ থামছে না। গতকালের পর এদিনও লোকসভার বিরোধী দলনেতা মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বেশ কিছু প্রশ্ন তুললেন। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর সঙ্গে ছিলেন ইন্ডিয়া মঞ্চ এবং মহা বিকাশ আঘাদির শরিক শিবসেনা (ইউবিটি)-র সঞ্জয় রাউথ এবং এনসিপি (এসপি)-র সুপ্রিয়া সুলে।

এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বেশ কিছু তথ্য তুলে ধরেন রাহুল গান্ধী। তাঁর অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচন পরবর্তী পাঁচ মাসে মহারাষ্ট্রে ৩৯ লক্ষ ভোটারের নাম যুক্ত হয়েছে। যা এককথায় অবিশ্বাস্য। কারণ ২০১৯ থেকে ২০২৪ - ৫ বছরে মহারাষ্ট্রে নতুন ভোটার নথিভুক্ত হয়েছিল ৩২ লক্ষ।

তিনি আরও দাবি করেন, মহারাষ্ট্রের মোট যে জনসংখ্যা, তার চেয়ে বেশি নাম বিধানসভার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং উল্লেখযোগ্যভাবে নতুন যেসব নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তার সবটাই বিজেপির পক্ষে গেছে। তাঁর দাবি, ৫ মাসে ভোটার তালিকায় নতুন যত নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে তা হিমাচল প্রদেশের মোট ভোটার সংখ্যার সমান।

রাহুলের আরও অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে বহু কেন্দ্র থেকেই ভোটারদের নাম বাদ অথবা অন্য কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে যাঁদের মধ্যে দলিত, আদিবাসী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটারদের সংখ্যাই বেশি। আশঙ্কা করা হচ্ছে বিধানসভার ভোটার তালিকায় যত নাম যুক্ত করা হয়েছে তার চেয়ে বেশি নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

বি আর আম্বেদকরকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, আম্বেদকর বলেছিলেন, ভোটার তালিকা গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অথচ নির্বাচন কমিশন ভোটারদের নাম, ছবি এবং ঠিকানা সহ ভোটার তালিকা প্রকাশ করেনি। যা গণতন্ত্রকে নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এর অর্থ হল সংবিধানকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হচ্ছে।

উদাহরণ হিসেবে কামাথি বিধানসভা কেন্দ্রের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এই কেন্দ্রে ১.৩৬ লক্ষ ভোট পেয়েছিল। বিধানসভা নির্বাচনেও কংগ্রেস এই কেন্দ্রে ১.৩৬ লক্ষ ভোট পেয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি এই কেন্দ্রে লোকসভায় পেয়েছিল ১.১৯ লক্ষ ভোট। যা বিধানসভায় বেড়ে হয়েছে ১.৭৫ লক্ষ। বিজেপির জয়ের ব্যবধান এবং এই কেন্দ্রে নতুন ভোটারের নথিভুক্তির সংখ্যা এক। ৩৫ হাজার। যা বিস্ময়ের সৃষ্টি করে।

রাহুল গান্ধী বলেন, সবথেকে বিস্ময়কর, নির্বাচন কমিশন আমাদের ভোটার তালিকা দিতে চাইছে না। যার অর্থ ওই তালিকায় নিশ্চই কোনও গরমিল আছে এবং তা কমিশন জানে। অথচ আমরা বারবার কমিশনের কাছে ভোটার তালিকা চাইছি। যাতে আমরা পুরো বিষয়টির পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে পারি এবং মীমাংসার জায়গায় পৌঁছতে পারি।

এদিন রাহুল গান্ধীর সাংবাদিক সম্মেলনের পরেই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে এক বিবৃতিতে বলেন, মহারাষ্ট্রের ভোটার লিস্ট সংক্রান্ত বিষয়ে বিরাট বড়ো গরমিল প্রকাশ্যে এসেছে। যে ভোটার লিস্ট অনুসারে নির্বাচন হয়েছে নির্বাচন কমিশনের অবশ্যই সেই তালিকা এক্সেল-এর মাধ্যমে ছবি সহ দেওয়া উচিত। আমরা কোনোভাবেই গণতন্ত্রের মাতৃভূমিকে জালিয়াতির গণতন্ত্র হতে দেব না।

এদিনই রাহুল গান্ধীর সাংবাদিক সম্মেলনের পর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন ট্যুইটার) এক বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে দাবি করা হয়েছে খুব শীঘ্রই লিখিত আকারে কমিশন তথ্যসহ এই বিষয়ে জানাবে।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in