তাঁকে ফলো করেন স্বয়ং মোদি, টুইটারে আবেদন করেও ওষুধ না পেয়ে মৃত্যু হল ভক্ত অমিতের

৪২ বছরে অমিতের অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে রেমডিসিভির দেওয়ার জন্য বলেন চিকিৎসকরা। ওষুধ কোথাও না পেয়ে শেষে টুইটারে মোদি এবং যোগী সরকারের কাছে আবেদন জানান।
তাঁকে ফলো করেন স্বয়ং মোদি, টুইটারে আবেদন করেও ওষুধ না পেয়ে মৃত্যু হল ভক্ত অমিতের
ছবি- সোশ্যাল মিডিয়া

মোদি-সখা হন বা মোদি-বিরোধী, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ওষুধ, সরঞ্জাম যে পাওয়া যাচ্ছে না, তা আরও একবার প্রমাণিত হল আগ্রার একটি ঘটনায়। কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন অমিত জয়সওয়াল। তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ছিল রেমডেসিভির। কিন্তু না পাওয়া যাওয়ায় তাঁর পরিবার টুইটারে ওষুধের জন্য আবেদন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ট্যাগ করেছিলেন।

হঠাৎ মনে হতে পারে তিনি প্রধানমন্ত্রী ট্যাগ করতে গেলে কেন? টুইটারে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ফলো করেন। তাই সবাই ভেবেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন তাঁকে ফলো করেন, তার মানে সাহায্যের আবেদন চাইলে হয়ত তাঁর চোখে পড়বে এবং মোদি সেই সাহায্য করবেনও। কিন্তু বাস্তবে গল্পটা সম্পূর্ণ অন্যরকম হয়ে গেল। ওষুধ না পেয়ে মৃত্যু হল অমিতের। কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর মায়েরও। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে দুই প্রিয়জনের মৃত্যুর পর বাড়ির পিছনে লাগানো মোদির ছবি ছিঁড়ে ফেলে তাঁর পরিবার।

উল্লেখ্য, অমিত জয়সোয়াল একজন আরএসএস কর্মী। তিনি নিয়মিত আরএসএসের সভাগুলোতে যেতেন। নির্মীয়মান রামমন্দিরে প্রার্থনা করতে গত ডিসেম্বর অযোধ্যায় গিয়েছিলেন তিনি। দুজনই কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর শুরু হয় হাসপাতালে ভর্তি করার যুদ্ধ। কিন্তু কোথাও জায়গা না পেয়ে মথুরার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৪২ বছরে অমিতের অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে রেমডিসিভির দেওয়ার জন্য বলেন চিকিৎসকরা। ওষুধ কোথাও না পেয়ে শেষে টুইটারে মোদি এবং যোগী সরকারের কাছে আবেদন জানান। তবে ওষুধ জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। হাসপাতালে ভর্তির ১০ দিন পর গত ২৯ এপ্রিল অমিতের মৃত্যু হয়। আর ৯ মে মৃত্যু হয় তাঁর মায়ের।

অমিত জয়সওয়ালের হোয়াটসঅ্যাপের ডিপিতে রয়েছে মোদির ছবি। টুইটারে বায়োতে লেখা, মোদি তাঁকে ফলো করেন, তার ঘোষণা। তাঁর বোন সোনু অলাঘ জানান, তাঁরা আশা করেছিলেন যে মোদি কিছু সাহায্য করবেন অথবা রাজ্য সরকারকে বলবেন সাহায্যের জন্য। কিন্তু কোনওটাই হয়নি। আরএসএসের একটি শাখা রোজগার ভারতীর আগ্রার বিজয়নগরের প্রধান অমিত গুপ্তাও জয়সোয়ালের আরএসএসের প্রতি ভক্তির কথা জানিয়ে বলেন, অমিত সংগঠনের একজন কঠোর পরিশ্রমী কর্মী ছিলেন। মোদি-যোগীর ভক্ত অমিত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগই শুনতে পছন্দ করতেন না।

সোনু জানান, তাঁরা অনেক আশা করছিলেন মোদি-যোগী আদিত্যনাথের কাছ থেকে তাঁরা সাহায্য পাবেন। কিন্তু কোনও কিছুই মেলেনি। মোদির এই উদাসীনতাকে তিনি কোনওদিনই ক্ষমা করবেন না। সারাজীবন মোদি ভক্ত থেকে কী পেলেন শেষ পর্যন্ত? প্রশ্ন তাঁর। তাঁদের অভিযোগ, মোদি যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ করতেন, তাহলে দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি এই জায়গায় পৌঁছত না।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in