নারকীয় কাণ্ড বিজেপি শাসিত কর্ণাটকে! চিকিৎসার নামে মানসিক প্রতিবন্ধী এক যুবকের কিডনি বিক্রি করা হয়েছিল। যার জের ২৯ বছরের ওই যুবকের মৃত্যুর ঘটেছিল। এই কাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল কর্ণাটক পুলিশ। এমনকি, ভিন্ন নামে মৃত দেহটিও দাহ করা হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এই রিপোর্ট সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। গত ৫ ডিসেম্বর, অভিযুক্ত ৫ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত ৫ পুলিশের মাইনে থেকে নিহত যুবকের পরিবারকে ১৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, যে নারকীয় কাণ্ডে কর্ণাটকের মুখ পুড়েছে, তা আসলে ঘটেছিল ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু, সেসময় পুরো ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল পুলিশ। এমনকি, নিহত প্রতিবন্ধী যুবকের পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগও নিতে অস্বীকার করেছিল পুলিশ। কমিশনের তদন্তে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য সামনে এসেছে।
এক বিব্রতিতে কমিশনের সদস্য কে বি চাঙ্গাপ্পা জানিয়েছেন, 'কমিশনের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে যে বেঙ্গালুরুর সিদ্দাপুর থানায় ২০২০ সালে নথিভুক্ত করা মামলার বিষয়ে এফআইআর দায়ের করতে ছয় মাস বিলম্ব করেছে পুলিশ। পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা এবং তদন্তকে বিপথে চালানোর বিষয়টিও আমাদের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।'
'তাই, অভিযুক্ত ৫ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের জন্য ডিজি ও আইজিপি প্রবীণ সুদকে সুপারিশ করেছে কমিশন।'
কমিশন জানিয়েছে - তৎকালীন সিদ্দাপুর থানার ইন্সপেক্টর এম এল কৃষ্ণমূর্তির বেতন থেকে ৩ লক্ষ টাকা, ইন্সপেক্টর শঙ্করাচারের কাছে থেকে ৭ লক্ষ টাকা, PSI সন্তোষ ও আব্রাহামের কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা করে এবং কনস্টেবল গোপালের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা কেটে নিহতের পরিবারকে দেওয়া হবে।
ঘটনাটি কী?
২০২০ সালের ৭ মার্চ, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেন শিবানন্দ বি বাভুরা নামে এক ব্যক্তি। অভিযোগে তিনি জানান, 'তার ভাগ্নে শঙ্করাপ্পা ছিলেন মানসিক প্রতিবন্ধী। মানসিক চিকিৎসার জন্য ২০১৭ সালে ১২ সেপ্টেম্বর তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল ফোসা মানবিক হাসপাতালে (Fosa Humanitarian Hospital)।'
'কিন্তু, ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর, পরিবারের অনুমতি ছাড়াই তাঁকে বেঙ্গালুরুর একতা চ্যারিটেবল ট্রাস্টে (Ekata Charitable Trust) স্থানান্তরিত করা হয়। এ সময় ট্রাস্ট্রের সদস্য শারদা নুলিমাথা, ম্যানেজার শ্রীধর বাসুদেব চৌহান এবং সহকারী ম্যানেজার রাজেন্দ্র ওরফে রাজন্না বাভোরা জানান, বিদেশী ডাক্তারদের কাছ থেকে শঙ্করাপ্পার অস্ত্রোপচার করাবেন তাঁরা। এ জন্য আমার কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল।
'এরপর, ২০১৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর, ট্রাস্ট্রের ম্যানেজার ফোন করে জানান, বেঙ্গালুরুর নিমহান্স হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে শঙ্করাপ্পা। এমনকি, তাঁর (শঙ্করাপ্পার) নামে ডুপ্লিকেট রশিদও দেখিয়েছিলেন তিনি।'
কিন্তু, বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় ৭ জুন, ২০১৯-এ সিদ্দাপুরা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন শিবানন্দ। পরে, কমিশনের কাছে তিনি অভিযোগে করেন, এফআইআর দায়ের না করেই মামলাটি চেপে দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।