কেরল বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে শরিক দলের সাথে তীব্র মতবিরোধ দেখা গেল বিরোধী ইউডিএফ জোটে। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট চেয়েছিল উত্তর কেরালার ধর্মাদোম আসনে পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে ফরওয়ার্ড ব্লকের জাতীয় সাধারণ সম্পাদক জি দেবরাজনকে প্রার্থী করতে। কারণ ইউডিএফ নেতৃত্বের ধারণা, জাতীয় স্তরে ফরওয়ার্ড ব্লক বামফ্রন্টের অংশ থাকায় বাম মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে প্রার্থী করলে রাজনৈতিকভাবে লাভবান হবে ইউডিএফ।
কিন্তু ইউডিএফ-এর এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে ফরওয়ার্ড ব্লক। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কথায়, বাম মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে বামফ্রন্টেরই শরিক দলের ন্যাশনাল সেক্রেটারিকে প্রার্থী করা হলে বিজেপির বিরুদ্ধে বৃহত্তর লড়াইয়ের পক্ষে তা ক্ষতিকারক হবে। বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে এই পদক্ষেপ সাধারণ মানুষকে "ভুল বার্তা" দেবে এবং বাংলার নির্বাচনে এর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। তবে দেবরাজন ছাড়া অন্য যে কোনো নেতাকে বিজয়নের বিরুদ্ধে প্রার্থী করতে রাজি ফরওয়ার্ড ব্লক।
সংবাদমাধ্যমে দেবরাজন জানিয়েছেন, "মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ইউডিএফ-এর পক্ষ থেকে আমাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আমি শুরুতেই তাদের জানিয়ে দিয়েছিলাম এটা অসম্ভব। তা সত্ত্বেও আমার ওপর চাপ বাড়ছিল। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটি বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে। ধর্মাদোমে আমাকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। তাদের কথায়, এই পদক্ষেপ মানুষকে ভুল বার্তা দেবে।"
কেরলের বাসিন্দা জি দেবরাজন জাতীয় স্তরের এক বিশিষ্ট বাম নেতৃত্ব। ইউপিএ সরকারের আমলে ইন্দো-মার্কিন পারমাণবিক চুক্তির সময় সরকারের সাথে আলোচনার জন্য বাম নেতাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন দেবরাজন।
জাতীয় স্তরে বামফ্রন্টের অন্যতম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় একটি আসন নিয়ে মতবিরোধের জেরে সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ ছেড়ে ইউডিএফ-এ যোগ দিয়েছিল। একইভাবে বামেদের আর এক শরিক আরএসপি কেরালায় ইউডিএফ জোটে রয়েছে। দেবরাজন জানিয়েছেন, "সিপিআইএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লক উভয়ই জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অংশ। তাই দল মনে করে, পিনারাই বিজয়নের বিরুদ্ধে আমাকে প্রার্থী করা সেই লড়াইকে দুর্বল করে দেবে। এছাড়াও, অন্য রাজ্যে উভয় দল একসাথে জোট বেঁধে লড়াই করছে। তাই বিজয়নের বিরুদ্ধে একজন জাতীয় সম্পাদকের লড়াই করা রাজনৈতিক ভাবে সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।"
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।