৩.৫ কোটি টাকার হাইওয়ে ডাকাতি মামলায় নাম জড়ালো একাধিক বিজেপি নেতার। কেরল বিধানসভা নির্বাচনের তিনদিন আগে ৩ এপ্রিল ত্রিশুর থেকে এর্নাকুলাম গামী হাইওয়ের ওপর কোডাকারা থানা এলাকায় এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। শনিবার রাজ্যের একাধিক হেভিওয়েট BJP নেতাকে ডেকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। আরো কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
শনিবার ত্রিশুর জেলার তিন বিজেপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের ডেকেছিল পুলিশ। এঁরা হলেন জেলার সাধারণ সম্পাদক কে আর হরি, সেন্ট্রাল রিজিওনাল সেক্রেটারি কাশীনাথন এবং জেলা কোষাধ্যক্ষ সুজয় সেনান।
ত্রিশুর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) তথা বিশিষ্ট RSS প্রচারক এম গণেশন এবং বিজেপির স্টেট অফিস সেক্রেটারি জি গিরিশনকে তলব করেছে ক্রাইম ব্রাঞ্চ। রবিবারই তাঁদের হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
কোডাকারা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ এপ্রিল অর্থাৎ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের একদিন পরে শামজীর শামসুদ্দিন নামের এক ব্যক্তি থানায় এই ডাকাতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, গাড়িতে করে ২৫ লক্ষ টাকা নিয়ে কোঝিকোড়ের এক ব্যবসায়ী তথা আরএসএস কর্মী একে ধর্মরাজনকে দেওয়ার জন্য আসছিলেন তিনি। রাজ্য বিজেপি যুব মোর্চার প্রাক্তন নেতা সুনীল নায়েক এই টাকা দিয়েছিলেন। কোডাকোরা ফ্লাইওভারের কাছে ন'জন লোক তাঁর গাড়ি আটকে তাঁকে ও তাঁর এক সঙ্গীকে মারধর করে টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের অনুমান এই টাকার আদান-প্রদানের বিষয়ে সব জানেন বিজেপি নেতারা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তেমনই তথ্য পেয়েছেন তাঁরা। শনিবার জেলাস্তরের যে তিনজন বিজেপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল তাঁরা রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এক পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, "আমরা অর্থের উৎসের পাশাপাশি এর গন্তব্যও দেখছি। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সহ আরও বিজেপি নেতাদের অর্থের উৎস যাচাই করতে তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হবে।"
পুলিশ আরো জানিয়েছে, অভিযোগে ২৫ লাখ টাকার কথা বলা হলেও আসল পরিমাণ ৩.৫ কোটি টাকা। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, "আমরা এক কোটি টাকা উদ্ধার করেছি... লুট হওয়া হওয়া টাকা একটি দলের মধ্যে ভাগ হয়েছিল। আমরা আশা করছি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বাকি টাকাও উদ্ধার করতে পারবো।"
রাজ্যে ক্ষমতাসীন LDF সরকারের অভিযোগ, এই ডাকাতি আসলে একটি 'নাটক', অব্যবহৃত ইলেকশন ফান্ড ভাগাভাগি করার জন্য স্থানীয় নেতারা এটা করেছেন।
যদিও বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলীয় সভাপতি কে সুরেন্দ্রন জানিয়েছেন, "এই ঘটনাকে বিজেপির সাথে যুক্ত করার চেষ্টা করা চলছে। বিজেপি বা এনডিএ কারোর অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই।"
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।