সাতজনের জ্বর। এইটুকু তথ্যই তাদের কাছে যথেষ্ট ছিল। খবর পেয়েই ছুটেছিলেন কেরলের ত্রিশুরের পুথুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা। এই অসুস্থ মানুষদের সাহায্যে যেতে হবে কেরলের পালাক্কাদ জেলার আট্টাপাডি জঙ্গলে। সেখানে বসবাসকারী আদিবাসী জনগোষ্ঠীরই সাতজন অসুস্থ। যাতায়াতের পথ একেবারেই সুগম নয়। বরং বাধা বেশি। ভবানী নদীর তীর পর্যন্ত গাড়ি যায়।
কিন্তু তারপর? বাকি রাস্তা হেঁটেই যেতে হবে। হেঁটেই নদী টপকে ওই আদিবাসীদের কাছে পৌঁছে গেলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। প্রায় দিনই করোনা সংক্রান্ত সাহায্য চেয়ে ফোন পান ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা। শুক্রবারও তার অন্যথা হয়নি। খবর পেয়ে ছুটে গিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের এই কাজকে কুর্নিশ জানিয়েছেন নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ।
আট্টাপাডি জঙ্গলে মুরুগুলা নামক একটি আদিবাসী জনজাতির মোট সাতটি পরিবার মিলিয়ে ৪০ জনের বাস। ফোনে স্বাস্থ্যকর্মীরা খবর পান, সাতজনের খুব জ্বর। স্বাস্থ্যকর্মীরা যেন একবার এসে দেখে যান। সেদিন বিকেল হয়ে যাওয়ায় শনিবার দেরি না করে সকালেই রওনা দেন চার সদস্যের মেডিক্যাল টিম। দলে ছিলেন ডঃ সুকন্যা, স্বাস্থ্য আধিকারিক সুনীল ভাসু, জুনিয়র স্বাস্থ্য ইন্সপেকটর সাইজু ও গাড়ির চালক সাজেশ।
ভবানী নদী অবধি গাড়িতে গিয়ে বাকি কয়েক কিলোমিটার পথ হেঁটেই যান স্বাস্থ্যকর্মীরা। নদীতে জলস্তর বেশি। প্রথমে সবাই কিছুটা ভয় পান। পরে ভয় কাটিয়ে একে অপরের হাত ধরে কোনও মতে নদী পার হন। এরপর প্রায় দুই কিলোমিটার পথ ট্রেক করে ওই জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, সেখানে ৩০ জন বাসিন্দার করোনা পরীক্ষা করা হলে সাতজনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। আক্রান্তদের পুথুর ডোমিসিলিয়ারি কেয়ার সেন্টারে স্থানান্তরিত করে বাকিদের আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়। ঘটনাটি জানতে পেরেই চিকিৎসক সুকন্যাকে ফোন করেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ।
সুকন্যা বলেন, 'প্রতি মাসেই স্বাস্থ্য ক্যাম্পের জন্য ওখানে যাই আমরা। এবার নদীতে জলস্তর বেশি থাকায় একটু সমস্যা হচ্ছিল। কয়েকজন নদীতে পড়েও গিয়েছিলেন। তবে মন্ত্রীর ফোন পাব, এতটা আশা করিনি। উনি আমাদের সকলের প্রশংসা করেছেন।'
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।