

রাজ্যের ২০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ১টিতে জয়ের পরেও সিপিআইএম কেরালা রাজ্য কমিটি মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের পাশেই দাঁড়ালো। দলের পাঁচ দিনের রাজ্য কমিটির অধিবেশনের শেষে রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দন এদিন জানান, বিজয়ন সরকারের ওপর আসা যে কোনও আক্রমণ প্রতিহত করা হবে।
রাজ্য কমিটির বৈঠকের শেষে সিপিআইএম কেরালার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে মূলত সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতির কারণেই এই পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে দল। কংগ্রেসের পক্ষে ভোট দিয়েছেন মুসলিম জনগোষ্ঠী, অন্যদিকে বিজেপি পেয়েছে হিন্দু-ইজাভা এবং খ্রীস্টানদের ভোট। এছাড়াও বিভিন্ন গির্জাকে কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তার কারণে বামেদের ভোট কমেছে।
রাজ্য কমিটির বৈঠকের পর রাজ্য সিপিআইএম জানিয়েছে, তারা মানুষের মন বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। গোবিন্দন জানান, জনগণের আস্থা ফেরাতে অবিলম্বে বেশ কিছু কর্মসূচি নেওয়া হবে। তার আগে সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত দলের কর্মীদের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন।
নির্বাচনী ফলাফল বিশ্লেষণের জন্য থিরুবনন্তপুরমে পাঁচ দিনের বৈঠকের শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সম্পাদক বলেন, এসডিপিআই, পিএফআই এবং জামাত-ই-ইসলামীর-র মত বেশ কিছু সাম্প্রদায়িক সংগঠন খোলাখুলি কংগ্রেসকে সমর্থন করেছে। এছাড়া আইইউএমএল প্রথম থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে আছে।
গোবিন্দন আরও বলেন, জাতীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে ইন্ডিয়া মঞ্চের কংগ্রেস, যারা ইন্ডিয়া মঞ্চের নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা বিজেপি বিরোধিতায় তুলনামূলকভাবে সিপিআইএম-এর চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছে। কেরালায় কংগ্রেসের ভালো ফলাফল হবার এটাও একটা বড়ো কারণ।
গোবিন্দন বলেন, হিন্দু-ইজাভা গোষ্ঠীর সংগঠন এসএনডিপি যোগমকে সমর্থন যুগিয়েছে আরএসএস। ফলে বিজেপির পক্ষে এসএনডিপি যোগম নেতৃত্বকে প্রভাবিত করা সম্ভব হয়েছে। কেরালায় গেরুয়া শিবিরের জোটসঙ্গী বিডিজেএস-এর মাধ্যমে এসএনডিপি সম্পাদক ভেল্লাপল্লী নাতেশন এবং তার ছেলে তুষার ভেল্লাপল্লীকে এই নির্বাচনে ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিজেপি খ্রীস্টানদের বড়ো অংশের ভোট পেয়েছে। কারণ বেশকিছু বিশপকে বিজেপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গেছে। সম্ভবত বিদেশি অনুদান সংক্রান্ত বিষয়ে সমস্যা মেটাতেই তাঁরা এটা করেছেন। এই কারণেই ত্রিশূর কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থীকে ৮০ হাজার ভোটে হারতে হয়েছে।
তিনি বলেন, কেরালায় বিজেপির বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে এবং রাজ্যের সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একত্রিত করে সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে সিপিআইএম।
সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে কেরালার ২০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস জয়ী হয়েছে ১৬ আসনে। ২টি আসনে জয়ী হয়েছে আইইউএমএল, ১টি করে আসনে আরএসপি এবং কেরালা কংগ্রেস। অন্যদিকে ১টি আসনে জয়ী হয়েছে সিপিআইএম এবং ১টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। এবারের ভোটে এলডিএফ-ভোট পেয়েছে ৩৩.৩৪ শতাংশ, ইউডিএফ পেয়েছে ৪৫.২১ শতাংশ এবং এনডিএ পেয়েছে ১৯.২৪ শতাংশ।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন