
কর্ণাটকে আর.এস.এস-এর কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করতে চলেছে সে রাজ্যের সরকার। বৃহস্পতিবার কর্ণাটক মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জনসমাগমে বা সরকারি স্থানে আর.এস.এস-কে কর্মসূচী করার অনুমতি দেওয়া হবে না। এই বিষয়ে শীঘ্রই আইন আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। যদি এই আইন কার্যকর হয় তাহলে কর্ণাটকই হবে দেশের প্রথম রাজ্য যেখানে আর.এস.এস-এর কার্যকলাপের উপর বিধিনিষেধ জারি থাকবে।
গত ৪ অক্টোবর কর্ণাটকে প্রকাশ্যে আর.এস.এস-এর কার্যকলাপে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে চিঠি লিখেছিলেন সে রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি ও বায়োটেকনোলজি মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খাড়গে। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, “আরএসএস নামের একটি সংগঠন সরকারি ও অনুদানপ্রাপ্ত স্কুল এবং সরকারি মাঠে নিজেদের শাখা পরিচালনা করে। স্লোগানের মাধ্যমে শিশু ও তরুণদের মনে সংবিধান ও দেশের ঐক্যের বিরুদ্ধে দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলছে। তাই আমি অনুরোধ করছি সরকারি ও অনুদানপ্রাপ্ত স্কুল, মাঠ, পার্ক, মন্দির, প্রত্নতত্ত্ব দফতরের স্থানসহ সব সরকারি জায়গায় আরএসএসের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হোক।”
তখনই এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইমত ব্যবস্থাও নিলেন তিনি। পূর্বতন বিজেপি সরকারের পুরনো একটি নির্দেশিকাকে হাতিয়ার করেই আর.এস.এস-এর উপর বিধিনিষেধ আনতে চাইছে বর্তমান কংগ্রেস সরকার।
২০১৩ সালে, যখন কর্ণাটকে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি, সেইসময় বেঙ্গালুরুতে একটি স্কুলে ব্যক্তিগত কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। সেই অনুমতি খারিজ করে দেওয়া হয়। তৎকালীন বিজেপি সরকার জানিয়েছিল, সরকারি স্কুল, খেলার মাঠ কেবল শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের জন্যই ব্যবহৃত হবে। ব্যক্তিগত বা অন্য কোনও কাজের জন্য নয়।
আর.এস.এস-এর কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করার জন্য বিজেপি সরকারের এই নির্দেশিকাকেই হাতিয়ার করবে সিদ্দারামাইয়ার সরকার বলে মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর প্রিয়াঙ্ক খাড়গে বলেন, "কোনও সংগঠনকে সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, কিন্তু এখন থেকে কেউ সরকারি অনুমতি ছাড়া জনসমাগমে বা রাস্তায় যা খুশি করতে পারবে না।"
তিনি বলেন, "রাস্তায় লাঠি ঘোরাতে ঘোরাতে মিছিল করতে পারবে না। আমরা যে নতুন আইন আনতে চলেছি, তাতে এগুলো উল্লেখ থাকবে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর, আইন দফতর, শিক্ষা দফতর যে যে নির্দেশিকা দিয়েছে, নতুন আইনের জন্য সেগুলি একত্রিত করা হবে। আইন, সাংবিধানিক কাঠামো মেনেই আইন আসবে।’’
যখন সাংবাদিকরা জানতে চান, এই সিদ্ধান্ত কি বিশেষভাবে আর.এস.এস-কে লক্ষ্য করে নেওয়া হয়েছে, উত্তরে রাজ্যের আইনমন্ত্রী এইচ কে পাতিল বলেন, "এটা আপনার মত হতে পারে। সরকার কোনও বিশেষ সংগঠনকে মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে যারা নিয়ম ভাঙছে, তাঁদের জন্যই এই পদক্ষেপ।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন