উত্তরপ্রদেশ জুড়ে কাঁওয়ার যাত্রীদের হাঙ্গামা ক্রমশই বাড়ছে। এ বছর যাত্রা শুরুর দিন থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে কাঁওয়ার যাত্রীদের আক্রমণের মুখে পড়েছেন একাধিক মানুষ। এমনকি স্কুল বাসও কাঁওয়ার যাত্রীদের উন্মত্ততার হাত থেকে রেহাই পায়নি। এবার কাঁওয়ার যাত্রীদের হাতে আক্রান্ত হলেন এক সেনাকর্মী। এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে তিন কাঁওয়ার যাত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
মির্জাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ওই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ইতিমধ্যেই ভাইরাল। যে ভিডিওতে বেশ কয়েকজন কাঁওয়ার যাত্রীকে সেনা পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তিকে মারধোর করতে দেখা যায়। একসময় মার খেতে খেতে তিনি পড়ে যান। এরপর আবার উঠে কাঁওয়ার যাত্রীদের কিছু বলতে গেলে ফের ওই সেনাকর্মীকে তারা আক্রমণ করে এবং মারধোর করে। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার।
জানা গেছে, সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স-এর ওই জওয়ান ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ধরার জন্য মির্জাপুর স্টেশনে গেছিলেন। স্টেশনেই টিকিট কেনার সময় কাঁওয়ার যাত্রীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন ওই সেনাকর্মী। এরপরেই বচসা পৌঁছে যায় হাতাহাতিতে। কাঁওয়ার যাত্রীরা দলবদ্ধভাবে ওই সেনাকর্মীকে মারতে শুরু করেন।
এই ঘটনায় গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে এক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ও রেলওয়ে আইনের ধারা ১১৫(২) (ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করা) এবং ধারা ৩৫২ (শান্তিভঙ্গ করার উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান) অনুসারে ওই মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে তিনজন কাঁওয়ার যাত্রীকে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।
জিআরপি-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই স্টেশনে আরও বেশি সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে উত্তরপ্রদেশে কাঁওয়ার যাত্রা প্রসঙ্গে ছাত্রদের সামনে একটি গান গাইবার জন্য এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার। বেরিলি জেলার ওই শিক্ষকের নাম ডঃ রজনীশ গাঙ্গোয়ার। সম্প্রতি তাঁর এক ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে ভিডিওতে ওই শিক্ষক গানের মাধ্যমে বলেছিলেন, ‘কাঁওয়ার যাত্রায় যেয়ো না, তার বদলে জ্ঞানের আলো জ্বালো।’
বেরিলির এমজিএম ইন্টার কলেজের শিক্ষক রজনীশ গাঙ্গোয়ার। ছাত্রদের সামনে তাঁর গাওয়া গান সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাবার পর ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর অফ স্কুলস অজিত কুমার সিং এক তদন্তের নির্দেশ দেন। শিক্ষকের কাছ থেকে এই গানের ব্যাখ্যাও তিনি চান। যদিও তিনি জানিয়েছেন, ওই শিক্ষকের কোনও বিদ্বেষপূর্ণ উদ্দেশ্য ছিলো না। সম্ভবত বিতর্ক তৈরির জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এই ভিডিওর প্রচার করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন