
আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ফের উত্তপ্ত রাজধানী পাটনা। শুক্রবার গভীর রাতে পাটনার অভিজাত গান্ধী ময়দান এলাকায় নিজের বাসভবনের কাছেই খুন হয়েছেন বিখ্যাত ব্যবসায়ী তথা বিজেপি নেতা গোপাল খেমকা। এই ঘটনায় রাজ্যের শাসক দল জেডিইউকে নিশানা করে রাজ্য প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছে বিরোধী আরজেডি।
জানা গেছে, শুক্রবার রাত ১১টা ৪০ মিনিট নাগাদ পাটনার একটি বিলাশবহুল হোটেলের সামনে একেবারে কাছ থেকে গোপাল খেমকার উপর গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। গুলি চালিয়েই পালিয়ে যায় তারা। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন গোপাল। হোটেলের কাছেই একটি আবাসনে থাকতেন এই ব্যবসায়ী। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার পরেই বিহারের শাসক দলকে নিশানা করেছেন বিরোধী আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে তিনি লেখেন, "পাটনা থানা থেকে কয়েক মিটার দূরে, বিহারের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে! বিহারে প্রতি মাসে শত শত ব্যবসায়ী খুন হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো একে জঙ্গলরাজ বলতে পারি না! কারণ শাস্ত্রে একে বলা হয়েছে মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, পারসেপশন ম্যানেজমেন্ট এবং ইমেজ ম্যানেজমেন্ট"।
পূর্ণিয়ার নির্দল সাংসদ পাপ্পু যাদব বিরোধীদের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করে এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি বলেন, "আমরা বিরোধী দলকে সমর্থন করি। কংগ্রেস পার্টি এবং আমাদের ইনচার্জের নির্দেশ অনুসারে, আমরা এই মাসের ৯ তারিখে নির্বাচন কমিশনের সামনে গরীবদের উপর আক্রমণ ও দারিদ্র্যের বিষয়টি উত্থাপন করব। আমরা গোপাল খেমকার হত্যার সিবিআই তদন্তেরও দাবি জানাই"।
আরজেডি মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি এই ঘটনাকে বিহারে 'অপরাধী শাসনের' প্রমাণ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, "এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। গত রাতে পাটনায় একজন সুপরিচিত ব্যবসায়ী, শ্রী গোপাল খেমকাকে নিজের বাসভবনের কাছে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এখানে অপরাধমূলক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দু'ঘন্টা পরে পুলিশ আসে। যারা আগের জঙ্গল রাজের কথা বলেন তাদের জিজ্ঞাসা করি, প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, দয়া করে বলুন, এটাকে কোন রাজ বলা উচিত? 'গুন্ডা শাসন', 'অপরাধমূলক শাসন' বিহারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে"।
অন্যদিকে শাসকদল জেডি(ইউ)-র মুখপাত্র নীরজ কুমার বলেন, "গোপাল খেমকা একজন বিশিষ্ট শিল্পপতি ছিলেন। পাটনার গান্ধী ময়দানের কাছে তাঁর নৃশংস হত্যাকাণ্ড একেবারেই মর্মান্তিক। অভিযুক্ত যেই হোক না কেন, যেকোনো হত্যাকাণ্ড আইনের শাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ। বিহারের ডিজিপি নিজেই তাৎক্ষণিকভাবে সর্বোচ্চ স্তরে বিষয়টির তদন্ত করেছেন এবং সিটি এসপি সেন্ট্রালের নেতৃত্বে একটি এসআইটি গঠন করা হয়েছে। এসআইটি মামলার সকল দিক তদন্ত করছে"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন