মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ কংগ্রেসের
মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ কংগ্রেসেরফাইল ছবি

ভারতের ভাবনাকে আঘাত করা হয়েছে, INDIA চুপ করে বসে থাকবে না - মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ কংগ্রেসের

নৃশংস ঘটনার ভিডিও সামনে আসতেই বিরোধী রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে শুরু করে ধিক্কার জানিয়ে সরব হয়েছে গোটা দেশ।

মণিপুর ইস্যুতে ফের কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধোনা করল কংগ্রেস। প্রায় দুইমাস পুরনো একটি নৃশংস হিংসার ভিডিও হঠাৎ করে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে আবারও বিরোধীদের প্রশ্নবাণে জেরবার মোদী সরকার। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একদল উন্মত্ত জনতা টেনে হিঁচড়ে দুই নগ্ন মহিলাকে খোলা মাঠের মধ্যে নিয়ে যাচ্ছে। ওই দুই মহিলাকে গণধর্ষণও করা হয়েছে বলে উঠেছে অভিযোগ।

এই ভিডিও নিয়ে কেন্দ্রকে তীব্র নিন্দা করেছে জাতীয় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বও। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে টুইট করে জানিয়েছেন, “মণিপুরে মনুষ্যত্ব মরে গিয়েছে। মোদী সরকার ও বিজেপি মণিপুরের সূক্ষ্ম সমাজ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে ‘ডেমোক্রেসি’কে ‘মবোক্রেসি’তে পরিণত করেছে। নরেন্দ্র মোদীজি, এই দেশ আপনার নীরবতাকে ক্ষমা করবে না।” এরপর প্রধানমন্ত্রী মোদী ও তাঁর সরকারকে কটাক্ষ করে খাড়্গের বক্তব্য, “আপনার সরকারের মধ্যে যদি বিন্দুমাত্র লজ্জা ও বিবেকবোধ থাকে তাহলে অবিলম্বে সংসদে মণিপুর নিয়ে কিছু বলুন এবং সারা দেশকে জানান সেখানে কী হচ্ছে। কাউকে দোষারোপ করবেন না কারণ, কেন্দ্র ও রাজ্য দুই জায়গাতেই বিজেপি সরকার রয়েছে। আপনার সাংবিধানিক দায়িত্ব পরিত্যাগ করেছেন আপনি। এই বিপদের সময়ে আমরা সবাই একসঙ্গে মণিপুরের মানুষের পাশে আছি।”

সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওর ঘটনাটি ৪ মে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাংপকপি জেলায় ঘটেছে বলে দাবি করেছে মণিপুরের উপজাতি সংগঠন আইটিএলএফ। যদিও মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, কাংপকপি নয়, ঘটনাটি অন্য একটি জেলায় ঘটেছে। তবে কাংপকপির থানাতেই এই ঘটনা নিয়ে এফআইআর দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি, ওই উপজাতি সংগঠনেরই অভিযোগ যে ভিডিওতে দেখানো দুই নগ্ন মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে।

কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ রাহুল গান্ধী টুইটারে জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা আর নিষ্ক্রিয়তা মণিপুরে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে। ভারতের ভাবনাকে আঘাত করা হয়েছে, INDIA কিন্তু চুপ করে বসে থাকবে না। আমরা মণিপুরের মানুষের সঙ্গে আছি। শান্তিই এখন একমাত্র পথ।” অন্যদিকে এই ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। ভাই রাহুলের মতো তিনিও টুইট করে জানিয়েছেন, “মণিপুরে মহিলাদের উপর হওয়া যৌন হিংসার ঘটনা হৃদয় বিদারক। মহিলাদের সঙ্গে হওয়া এই ভয়ানক হিংসার ঘটনার যত নিন্দা করা যায় ততই কম। আমাদের সমাজে মহিলা এবং শিশুদেরকেই সবচেয়ে বেশি হিংসার ঘটনার শিকার হতে হয়। আমাদের সবাইকে মণিপুরে শান্তি ফেরানোর চেষ্টায় একসুরে নিন্দা করতে হবে।”

কেন্দ্র সরকার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রী জি, মণিপুরের এই হিংসাত্মক ঘটনাগুলির পরও চোখ বন্ধ করে বসে আছেন কেন? এইধরণের ছবি আর হিংসাত্মক ঘটনাও কি আপনাদের বিচলিত করে না?” মণিপুরের এই ঘটনা নিয়ে বুধবার রাত থেকেই সরব হয়েছে গোটা দেশ। রাজধানী দিল্লিতে একেরপর এক বিক্ষোভ প্রতিবাদ কর্মসূচী গড়ে উঠছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ক্রীড়া, সিনেমা ও শিল্প জগতের একাধিক তারকারাও। উত্তাল সংসদও। ঘটনার দু’মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরেও মণিপুরের পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখন ভিডিওটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই অভিযুক্ত একদল উন্মত্ত যুবকের মধ্যে মাত্র একজনকে গ্রেফতার করায় দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অপহরণ, যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ ও গণধর্ষণ-সহ বেশ কয়েকটি ধারায় এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ কংগ্রেসের
'গুরুতর সাংবিধানিক ব্যর্থতা, সরকার পদক্ষেপ না নিলে আমরা নেব', মণিপুর-কাণ্ডে হুঁশিয়ারি শীর্ষ আদালতের

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in