

'বুলডোজার নীতি' নিতে সুপ্রিম কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে উত্তরপ্রদেশ সরকার। রাতারাতি কোনও ব্যক্তির বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া যায়না বলে স্পষ্ট করে জানাল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
২০১৯ সালে রাস্তার পরিসর বাড়ানোর জন্য রাস্তার দুধারে থাকা একাধিক 'বেআইনি' বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল যোগী সরকার। মনোজ টিব্রেওয়াল আকাশ নামে এক ব্যক্তির বাড়িও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই নিয়ে ২০২০ সালে এক স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে বুধবার ছিল এই মামলার শুনানি।
শুনানিতে উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই ব্যক্তি সরকারি জমি দখল করে বাড়ি বানিয়েছিলেন। পাল্টা প্রধান বিচারপতি জানান, 'সরকার জানিয়েছে ওই ব্যক্তি ৩.৭ বর্গ মিটার জমি দখল করে রেখেছিলেন। এটা অবশ্যই বেআইনি কাজ। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনি (সরকার) মানুষের বাড়ি ভেঙে দেবেন। এটা অনাচার'।
প্রধান বিচারপতি বলেন, 'বিনা নোটিশে বাড়ি ভেঙে ফেলা সত্যিই চিন্তার বিষয়। মামলায় স্পষ্ট যে প্রশাসনিক কর্তার নির্দেশ ছাড়াই বাড়িটি ভাঙা হয়েছে। মামলাকারী তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি ভেঙে ফেলার একমাত্র কারণ হল সংবাদপত্রে সড়ক নির্মাণে বেনিয়ম তুলে ধরেছিলেন তিনি। ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষেত্রে রাষ্ট্র এই ধরণের কাজ কখনই করতে পারে না।'
প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন যে, আবেদনকারীকে ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে উত্তরপ্রদেশ সরকার। রাজ্য সরকারকে এই ধরনের ক্ষেত্রে অবশ্যই দখলদারি ওঠাতে অপসারণের নোটিশ জারি করতে হবে প্রথমে। কোনো আপত্তির বিষয়ে আইন মেনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং দখল অপসারণের জন্য ন্যূনতম সময় দিতে হবে পরিবারগুলিকে।
বিচারপতি পারদিওয়ালা বলেন, "বুলডোজার নিয়ে এসে রাতারাতি এইভাবে মানুষের বাড়ি ভাঙা যায় না। সকল পরিবারকেই বাড়ি খালি করার ন্যূনতম সময় দিতে হবে। বাড়িতে বহু আসবাবপত্র থাকে। সেই সমস্ত জিনিসের কী হবে?"
জানা গেছে, ২০১৯ সালে রাস্তা পরিসরের কারণ দেখিয়ে কেবল একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ১২৩টি বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে তদন্ত চালিয়ে যারা এই বুলডোজার অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
শীর্ষ আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে কংগ্রেস ও সমাজবাদী দল।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন