"প্রতিদান পেলাম" - সুড়ঙ্গে আটক শ্রমিকদের উদ্ধারকারীর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিল DDA

People's Reporter: গত বছর দীপাবলির পর উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করতে শেষে যে র‍্যাট হোল মাইনারদের সাহায্য নেওয়া হয়েছিল, সেই দলের অন্যতম লিডার ছিলেন অকিল হাসান।
বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বাড়ি (বামদিকে)
বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বাড়ি (বামদিকে)ছবি সংগৃহীত

গতবছর উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করে জনগণের কাছে ‘ন্যাশনাল হিরো’র তকমা পেয়েছিলেন র‍্যাট হোল মাইনার অকিল হাসান। এবার সেই ‘ন্যাশনাল হিরো’র বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিল দিল্লি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (ডিডিএ)।  

বুধবার সকালে উত্তর-পূর্ব দিল্লির খাজুরি খাস এলাকায় সরকারি জমিতে বেআইনি দখল উচ্ছেদ অভিযানে যায় ডিডিএ। সেই অভিযানেই ভেঙে ফেলা হয় হাসানের বাড়ি। গত বছর দীপাবলির পর উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করতে শেষে যে র‍্যাট হোল মাইনারদের সাহায্য নেওয়া হয়েছিল, সেই দলের অন্যতম লিডার ছিলেন অকিল হাসান।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক ভিডিও বার্তায় ধ্বংসের পরের দৃশ্য তুলে ধরেছেন হাসান। বুলডোজারের গুঁতোয় গুঁড়িয়ে যাওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, “ডিডিএ কর্তারা যখন আসেন দেই সময় আমি বা আমার স্ত্রী কেউ বাড়িতে ছিলাম না। তখন বাড়িতে আমার তিন ছেলে মেয়ে ছিল। ওদের বাইরে বের করে দিয়ে বাড়ি ভাঙা শুরু হয়।“

ভিডিও বার্তায় হাসান অভিযোগ করেছেন, ভেঙে ফেলার আগে কোনও নোটিশ পাননি তিনি। তাঁর একাধিকবার অনুরোধ সত্ত্বেও ডিডিএ তাঁর বাড়ি ভেঙে ফেলেছে।

হাসান জানিয়েছেন, এই বাড়িই একমাত্র জিনিস যা উত্তরাখণ্ড উদ্ধার অভিযানের পর পুরস্কার হিসেবে চেয়েছিলেন তিনি। এই কলোনিতে দীর্ঘদিন বসবাস করছেন হাসান।

হাসান বলেন, ”আমারা আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জীবন বাঁচিয়ে ছিলাম। একবারও নিজেদের কথা ভাবিনি। কারণ তখন মনে হয়েছিল শ্রমিকদের প্রাণ বাঁচানো আমাদের কর্তব্য। এইভাবে আমাকে প্রতিদান দিল তার। আমার পরিবারকে ঘর ছাড়া করল ডিডিএ।“

ভিডিওতে হাসানের সাথে মুন্না কুরেশিকে দেখা গেছে, যিনিও সিলকিয়া সুড়ঙ্গ থেকে শ্রমিকদের উদ্ধার অভিযানে এই র‍্যাট হোল মাইনার দলের নেতৃত্বে ছিলেন। মুন্না অভিযোগ করেছে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে থানায় গেলে সেখানেও বর্বরতার শিকার হতে হয়েছে তাঁদের।

অসহায়ের মতো হাসানের প্রশ্ন, “এখন কোথায় যাব জানিনা। বাড়ি আসি যখন, তখন আমাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আমার ফোন নিয়ে নেওয়া হয়। আমার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের নিয়ে কোথায় রাত কাটাব?”

উল্লেখ্য, হাসান এবং মুন্না সহ এই র‍্যাট হোল মাইন দলের পাঁচ সদস্য দিল্লিতে থাকেন। এবং বাকিরা উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে থাকেন।

GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in