
বাঁধনছাড়া বৃষ্টিতে ফের ভয়াবহ বন্যা হিমাচল প্রদেশে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়ে রাজ্যের কুল্লু জেলার আন্নি এলাকায় বৃহস্পতিবার ভেঙে পড়ল মোট ৮টি বহুতল। প্রশাসন সূত্রে খবর, বাড়িগুলিতে ৪-৫ দিন আগেই ফাটল দেখা গিয়েছিল। তাই আর দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গেই বাড়িগুলিকে ‘বিপজ্জনক’ ঘোষণা করে খালি করে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। আন্নির সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট নরেশ বর্মা নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
দেখুন বাড়ি ভেঙে পড়ার ভিডিও -
বুধবার থেকে হিমাচলে ফের বেড়েছে বৃষ্টির পরিমাণ। চলতি বর্ষার মরশুমে এই নিয়ে তৃতীয়বার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হল সে রাজ্যে। বুধবার তৃতীয় দফার বৃষ্টিতে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পালমপুর। ওই অঞ্চলে গত সন্ধ্যা থেকে ১৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যেখানে নাহান অঞ্চলে ৯৩ মিলিমিটার, শিমলায় ৭৯ মিলিমিটার, ধর্মশালায় ৭০ মিলিমিটার এবং মাণ্ডিতে ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। চলতি আগস্ট মাসে এখনও পর্যন্ত বন্যা বিধ্বস্ত হিমাচলে বন্যা সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্ততপক্ষে ১২০ জন। আর জুন মাসের শেষের দিক থেকে এই হিসেব করলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ২৩৮ এ। এবং ৪০ জন এখনও নিখোঁজ।
প্রথমবার ৯ ও ১০ জুলাইয়ের লাগাতার বৃষ্টিতে হওয়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় কুল্লু ও মাণ্ডি জেলা। দ্বিতীয় দফায় শিমলা ও সোলান জেলায় ভয়ানক বন্যার ছবি দেখা যায় ১৪ ও ১৫ আগস্টের বৃষ্টিতে। আর শেষবার, গতকাল থেকে হওয়া নাগাড়ে বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিমলা শহর। বৃষ্টিতে রাজ্য জুড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রায় ৭০০-এরও বেশি রাস্তা। ‘বিপদজ্জনক’ তকমা দিয়ে খালি করে দেওয়া অসংখ্য বাড়ি। পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৩০৫ নং জাতীয় সড়কও।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু বুধবার এই নিয়ে জানিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতির সামাল দেওয়া ও দ্রুত উদ্ধারকার্য চালানোর জন্য ইতিমধ্যেই সমস্ত ডেপুটি কমিশনারদের ১৬৫.২২ কোটি টাকা অনুদান দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত চলতি বর্ষার মরশুমের ব্যাপক বৃষ্টিতে ১০ হাজার কোটি টাকার সরকারী সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তামিলনাড়ু সরকার বৃষ্টি বিধ্বস্ত হিমাচল প্রদেশকে ত্রাণ কাজের জন্য ১০ কোটি টাকা দিয়েছে।