

হরিয়ানার নুহ জেলার সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় এবার সরাসরি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুললেন রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দুষ্মন্ত চৌটালা। সোমবার ভিএইচপি-এর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে ছড়ানো হিংসা ওই সংগঠনেরই গাফিলতির ফলাফল বলে আজ মন্তব্য করেছেন তিনি। আবার অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই সন্ত্রাসের পিছনে বড়সড় 'ষড়যন্ত্র'-র ইঙ্গিত দিয়েছেন।
সোমবার হরিয়ানার নুহ প্রদেশে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলকে ঘিরে এই অশান্তির সূত্রপাত। এখনও পর্যন্ত এই হিংসাত্মক ঘটনায় ৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে, যার মধ্যে ২ জন পুলিশকর্মী রয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। একাধিক দোকান, রেস্টুরেন্ট, গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন উত্তেজিত জনতা।
বুধবার নুহ জেলার ঘটনা নিয়ে জেজেপি প্রধান দুষ্মন্ত চৌটালা জানান, "বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে তাদের শোভাযাত্রা নিয়ে সমস্ত তথ্য জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়নি। তাই জেলা প্রশাসন সঠিক সময়ে অশান্তি রুখতে সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এই ঘটনায় জড়িত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"
চৌটালার অভিযোগের তির ভিএইচপি-এর দিকে হলেও মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টার জানিয়েছিলেন, “একটি যাত্রার আয়োজন করা হচ্ছিল, সেই সময় কিছু লোক মিছিলে অংশ নেওয়া ব্যক্তি এবং পুলিশের উপর হামলার ষড়যন্ত্র করেছিল। বেশ কয়েকটি জায়গায় সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। এর পিছনে একটি বড় ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে হচ্ছে।“
খট্টারের সহকর্মী অনিল ভিজও এই ঘটনায় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, "এর পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র হয়েছে। যেভাবে পাথর, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাগুলির ব্যবহার হয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে এর পিছনে নিশ্চয়ই কোনও দুর্ধর্ষ 'মাস্টারমাইন্ড' রয়েছে। আমরা এই ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করব এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেব।" তিনি আরও জানিয়েছেন, "নুহতে বছরের পর বছর ধরে সম্প্রদায়গুলি শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। বাইরে থেকে মদত না দিলে এধরণের অশান্তি বাঁধতে পারে না।"
আবার বিরোধীদের একাংশের মতে, নুহতে ভিএইচপি-এর মিছিলে বজরং দল নেতা তথা গো-রক্ষা সংগঠনের প্রধান হিন্দুত্ববাদী নেতা মনু মানেসরের উপস্থিতি সন্ত্রাস ছড়ানোয় উস্কানি দিয়েছে। আগেও তাঁর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক হিংসায় প্ররোচনা দেওয়া এবং দুই সংখ্যালঘু ব্যক্তিকে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে। তবে সোমবারের মনুর কোনও ভূমিকা নেই বলেই জানিয়েছেন মনু নিজেই।
তবে জোটসঙ্গী জননায়ক জনতা পার্টি প্রধানের এই মন্তব্যে বিজেপির সাথে তাদের সম্পর্কের টানাপড়েন আরও একবার প্রকাশ্যে এল।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন