স্ট্যান্ডিং কমিটিতে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের পক্ষে মত, তৃণমূলের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ হান্নানের

সর্বভারতীয় কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন- “ তৃণমূল দাবি করে তারা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে। অথচ তৃণমূল সাংসদের নেতৃত্বাধীন কমিটি চাষিদের ধোঁকা দিয়ে এই রিপোর্ট দিল। তৃণমূলকে এর জবাব দিতে হবে।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও হান্নান মোল্লা
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও হান্নান মোল্লাফাইল ছবি সংগৃহীত
Published on

বিতর্কিত কৃষি আইনের বিরোধিতা করেছে প্রায় সব বিরোধী দলই। কিন্তু আদৌ কি তাই? প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। সম্প্রতি তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন কৃষি বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি জানিয়েছে - অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন কৃষকদের পক্ষে ভালো - এতে কৃষি ক্ষেত্রে লগ্নির পরিবেশ তৈরি হবে। অবিলম্বে সরকারের এই আইন লাগু করা উচিৎ। এই সংসদীয় কমিটিতে – কংগ্রেস, শিবসেনা, আপ, তৃণমূলের সাংসদেরা আছেন। প্রশ্ন উঠছে- কৃষি আইনের রাজনৈতিকভাবে বিরোধিতা করার পর এই দ্বিচারিতা কেন? আপত্তি জানাতে পারতেন তাঁরা- কেউই তা করলেন না কেন?

প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে সংসদীয় অধিবেশনে কার্যত বিরোধীশূন্য পরিবেশে তিন কৃষি আইন পাস করানো হয় - অন্তত বিরোধীদের তেমনই অভিযোগ। অত্যাবশকীয় পণ্য আইন সংশোধন – এই তিনটি আইনের অন্যতম একটি। এই আইনের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় ২০ টি খাদ্যশস্যকে “অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যপণ্য'-র তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং খাদ্য শস্য মজুতের ঊর্ধ্বসীমা বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ চাল, ডাল, পেঁয়াজ, আলু সহ ২০ টি খাদ্য শস্য কর্পোরেট ফার্মরা যতখুশি মজুত করতে পারবে। আদানি, আম্বানি, ওয়ালমার্টের মতো বৃহৎ পুঁজির কাছে কৃষি বাজারকে সঁপে দিচ্ছে বলেই কৃষক নেতৃত্বের অভিযোগ। বাজারে কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করে মুনাফা করবে কর্পোরেট ফার্মরা এমনও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে ব্যস্ত সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিং-এ তিনি হাজির ছিলেন না। প্রশ্ন হচ্ছে - এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রে তিনি বিধানসভা নির্বাচনে ব্যস্ত থাকার অজুহাত দিলেন কেন? সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলছে সংযুক্ত কৃষক মোর্চার নেতৃত্ব। সে দিনের বৈঠকে তাঁর বদলে বিজেপির অজয় মিশ্র বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। কিন্তু কোনো সদ্যস্যই আপত্তি জানাননি। অবশ্য কংগ্রেস সাংসদ সপ্তগিরি উল্কা স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন - তিনি ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বটে - কিন্তু তাকে খসড়া রিপোর্ট পড়ার যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়নি।

সর্বভারতীয় কৃষক সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন- “ তৃণমূল দাবি করে তারা কৃষি আইনের বিরুদ্ধে। অথচ তৃণমূল সাংসদের নেতৃত্বাধীন কমিটি চাষিদের ধোঁকা দিয়ে এই রিপোর্ট দিল। তৃণমূলকে এর জবাব দিতে হবে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে হাজির ছিলেন না বলে তৃণমূল এর দায় এড়াতে পারে না। এটা কে দ্বিচারিতা ছাড়া অন্যকিছু বলা যায় কী!”

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in