মোদি সরকারের আর্থিক সংস্কারের নীতিতে সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে একে একে বেসরকারিকরণ করা হবে। কৃষি, খাদ্য, সার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে সরকারি ভর্তুকি বরাদ্দ কমানোই লক্ষ্য। বুধবার এমনটাই স্পষ্ট জানালেন কেন্দ্রীয় অর্থসচিব টিভি সোমনাথন। দেশের ইকোনমিক থিঙ্ক ট্যাংক ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ অ্যাপ্লায়েড ইকোনমিক রিসার্চ আয়োজিত ইন্ডিয়া পলিসি ফোরাম ২০২১ শীর্ষক আলোচনাসভায় এমনই মতামত দেন অর্থসচিব।
ইতিমধ্যে ব্যাংক সংযুক্তিকরণের মধ্য দিয়ে কমানো হয়েছে ব্যাংকের সংখ্যা। দুটি ব্যাংকের বেসরকারিকরণ প্রক্রিয়া চালু হয়ে গিয়েছে। এদিন সোমানাথন বলেন, 'ধীরে ধীরে সব রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের বেসরকারিকরণ করা হবে। খুবই সামান্য কিছু ব্যাংক থাকবে সরকারি ব্যাংক হিসেবে।' তিনি এটিকে নিজস্ব মত বললেও আর্থিক সংস্কারের মূল লক্ষ্য বলে জানিয়ে দেন।
তাঁর কথায়, কেন্দ্রের লক্ষ্য সরকারি খরচে সব বাজে খরচ কমিয়ে তার মান উন্নত করা। এতে ভর্তুকির ক্ষেত্রে সংস্কার করা দরকার। তবে সরকার অনেক ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি জানান, সরকার এমন কিছু পদক্ষেপ করেছে, যার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল জ্বালানিতে ভর্তুকি তুলে দেওয়া।
প্রসঙ্গত, এখন পেট্রোল-ডিজেলে ভর্তুকি মেলে না। উপরন্তু বিপুল কর চাপিয়ে আয় করে কেন্দ্র এবং রাজ্য। এতে বাজারে সবকিছুর দাম বাড়লেও ভ্রুক্ষেপ নেই সরকারের। রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি কার্যত নেই। একটা সিলিন্ডারের দাম ছুঁয়েছে হাজার টাকা। অর্থসচিবের কথায়, 'দেশের আর্থিক সংস্কার করতে ভর্তুকি সংস্কার করা দরকার। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে যে ভর্তুকি দেওয়া হয়, তা আদৌ সঠিক জায়গায় হচ্ছে কিনা তা দেখা দরকার। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মান বাড়ানোর জন্য ভর্তুকি অবশ্যই দরকার।'
কেন্দ্রের মোদী সরকার যে নীতিতে এগোচ্ছে, আগামী দিনে দেশে কোনো সরকারি ব্যাংক থাকবে না বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। অর্থনীতির উপর যে এর প্রভাব মারাত্মক হতে পারে সে বিষয়েও সতর্ক করছেন তাঁরা। ব্যাংক জাতীয়করনের উদ্দেশ্য ছিল- কেবলমাত্র সমাজের মুষ্টিমেয় মানুষ নয়, সমাজের প্রান্তিক মানুষরাও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সাথে যেন যুক্ত হতে পারে। তাই আবার বেসরকারিকরণ হলে আবার পুরানো মহাজনী সুদের কারবার রমরমা হতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।