

দিল্লির মসনদে থাকা বিজেপি সরকার এক দেশ, এক ভাষা, এক ধর্ম, একই ধরণের খাদ্যাভাস এবং সংস্কৃতির বোঝা চাপিয়ে দিতে চাইছে দেশের মানুষের উপর। হ্যাঁ, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ আনলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। বিজেপি সরকার দেশের হিন্দিভাষীদের প্রথম শ্রেণির নাগরিক আর অ-হিন্দিভাষীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বলে মনে করে বলেও দাবি তাঁর।
হিন্দিকে দেশের রাষ্ট্রভাষা করার লক্ষ্যে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে একটি সুপারিশ জমা দিয়েছেন। সেই সুপারিশের তীব্র বিরোধিতা করেন স্ট্যালিন। কেন্দ্রকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষাকে সরিয়ে তার জায়গায় জোর করে হিন্দি চাপানো হলে এর ফল ভালো হবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে গোটা দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো বিঘ্নিত হচ্ছে বলে দাবি করেন ডিএমকে নেতা।
ভারত সরকারের প্রতিষ্ঠানে হিন্দিতে কাজ করা বাধ্যতামূলক! তাই কেন্দ্রের অধীনস্থ সকল বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ-কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ দেশের সর্বত্রই হিন্দি ভাষাকে শিক্ষার প্রধান মাধ্যম করতে চাইছে সরকারি ভাষা সম্পর্কিত কমিটি। শুধু তাই নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতেও নিয়োগ নির্ভর করবে হিন্দি জানার উপর। একাদশতম সরকারি ভাষা সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে এমনটাই ঘোষণা করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে একটি ট্যুইট করেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে স্পষ্টভাষায় তিনি জানান, সরকারী ভাষা সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির একাদশতম রিপোর্টে উল্লেখিত প্রস্তাবগুলি দেশবাসীর উপর সরাসরি আক্রমণ। ভারতের বৈচিত্র্য অস্বীকার করে বলপূর্বক হিন্দি চাপানোর জন্য বিজেপির এই কঠোর প্রয়াস, উদ্বেগজনক গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
একাদশতম সরকারি ভাষা সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে স্পষ্টভাবেই উল্লেখ রয়েছে, দেশের সমস্ত কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (আইআইটি, আইআইএম, এইমস ইত্যাদি) এবং অ-কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (কেন্দ্রীয় সরকার অধীনস্থ বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়) গুলিতে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে হিন্দি ব্যবহার করা উচিত। সেক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষা হবে ঐচ্ছিক।
এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে স্ট্যালিন বলেন, দেশের মোট ২২টি সরকারি ভাষা আছে। তার মধ্যে যখন আরও আঞ্চলিক ভাষাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তোলা হচ্ছে, তখন নরেন্দ্র মোদীর সরকার কেন চাকরির পরীক্ষায় ইংরেজির বদলে হিন্দিকে ব্যবহার করতে চাইছে? যাঁরা নিজের মাতৃভাষাকে শ্রদ্ধা করেন এবং ভালোবাসেন, তাঁরা কখনও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন না।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন