
আরব সাগরে তৈরি হওয়া মৌসুমের প্রথম ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ ক্রমেই শক্তিশালী হয়ে উঠছে। মৌসুম ভবন জানাচ্ছে, এর প্রভাবে আগামী কয়েক দিন মহারাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে ভারী বৃষ্টি, দমকা হাওয়া এবং উত্তাল সমুদ্র পরিস্থিতি থাকার সম্ভাবনা। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরানোর প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
আইএমডির পূর্বাভাস অনুযায়ী, মুম্বই, থানে, পালঘর, রায়গড়, রত্নাগিরি ও সিন্দহুদুর্গে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত উচ্চ থেকে মাঝারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তর মহারাষ্ট্র উপকূলে ইতিমধ্যেই ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৫৫ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে, সর্বোচ্চ ৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় আরও তীব্র হলে বাতাসের বেগ আরও বাড়তে পারে।
সমুদ্রের অবস্থাও ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। ৫ অক্টোবর পর্যন্ত আরব সাগরের উত্তর দিকের জলরাশি অতি উত্তাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে। তাই মৎস্যজীবীদের সাগরে না নামার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। একই সঙ্গে নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে সম্ভাব্য জোয়ার ও জলবদ্ধতার আশঙ্কায়।
শুধু উপকূল নয়, মহারাষ্ট্রের ভেতরেও বৃষ্টির দাপট থাকবে বলেই পূর্বাভাস। বিদর্ভ এবং মরাঠওয়াড়া অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর কোকণের নিচু এলাকাগুলিতে জল জমে প্লাবনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আইএমডি।
শ্রীলঙ্কার দেওয়া নাম ‘শক্তি’ এখন পশ্চিমমুখী হয়ে আরব সাগরের কেন্দ্রীয় অংশের দিকে এগোচ্ছে। শনিবার সকাল নাগাদ এটি একটি ‘সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম’ (অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়)-এ পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এরপর এটি ধীরে ধীরে পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম দিকে সরে গিয়ে ৫ অক্টোবর নাগাদ আরব সাগরের উত্তর-মধ্যভাগে পৌঁছবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, “ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে আগামী রবিবার পর্যন্ত গুজরাত ও উত্তর মহারাষ্ট্র উপকূল এবং পাকিস্তানের উপকূলবর্তী এলাকায় সমুদ্রের অবস্থা অত্যন্ত উত্তাল থাকবে।”
শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার রিপোর্ট অনুযায়ী, ঝড়টি আরব সাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থান করছিল। গত ছয় ঘণ্টায় এটি ঘণ্টায় প্রায় ৮ কিলোমিটার বেগে পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে। তখন এর কেন্দ্রস্থল ছিল দ্বারকা থেকে প্রায় ৩০০ কিমি পশ্চিমে, করাচি থেকে ৩৩০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পোরবন্দর থেকে প্রায় ৩৬০ কিমি পশ্চিমে।
উত্তর ও পশ্চিম মহারাষ্ট্রের উপকূলে জারি রয়েছে লাল সতর্কতা। প্রশাসনের নির্দেশ, উপকূলবর্তী এলাকায় বসবাসকারীরা যাতে নিরাপদ স্থানে চলে যান। উদ্ধার দল ও ত্রাণ সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য।