জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র বেপাত্তা? সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর ভুয়ো, দাবি রেলের

একাংশের দাবি, দুর্ঘটনার আসল কারণ না খুঁজে সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কর্মচারীর নাম যেহেতু আমির খান, তাই তাঁর নিখোঁজ হওয়ার গল্প ফেঁদে তা প্রচার করানো হচ্ছে।
বালাসোরের কাছে করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা
বালাসোরের কাছে করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনাছবি সৌজন্য - বিলাল রশিদের ট্যুইটার হ্যান্ডেল
Published on

ওড়িশার মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনার পর থেকে বাহানাগা স্টেশনের এক কর্মচারী নাকি বেপাত্তা? কয়েকটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ওড়িশার বালাসোরের রেল দুর্ঘটনা নিয়ে। এই খবরকে পুরোপুরি ভুয়ো বলে দাবি করল রেল।

সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, দুর্ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই সূত্রে তারা জানতে পেরেছে, যে বাহানাগা স্টেশনের কাছে তিনটি ট্রেন একসঙ্গে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল সেই স্টেশনের এক কর্মচারী নিখোঁজ। স্টেশনের কাছে তাঁর বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। সংবাদমাধ্যমের এই খবরকে পুরোপুরি ভুয়ো বলে দাবি করলেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্যকুমার চৌধুরি। মঙ্গলবার একটি ভিডিও টুইট করে তিনি জানিয়েছেন, “এই খবর পুরোপুরি ভুল। বাহানাগা স্টেশনের সমস্ত কর্মচারীই কর্মরত রয়েছেন এবং তাঁরা তদন্তে সাহায্য করছেন।”

প্রসঙ্গত, গত ২ জুন ওড়িশার বালাসোরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয় আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস, ডাউন যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস ও একটি মালগাড়ি। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। এই দুর্ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।

মঙ্গলবার সিবিআই-এর সূত্রে খবর বলে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, আমির খান নামের বালাসোরের সোরো সেকশনের রেলের এক জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র পলাতক। সিবিআই অফিসাররা বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে তাঁর বাড়িতে গিয়েও তাঁর খোঁজ পাননি বলে জানানো হয়। রিপোর্টে আরও বলা হয়, সোমবার ওই জুনিয়র ইঞ্জিনিয়রের বাড়ি ‘সিল’ করে দেয় সিবিআই। এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই স্বাভাবিকভাবেই করমণ্ডল রেল দুর্ঘটনার তদন্ত নয়া মোড় নিয়েছে বলে মনে করা হতে থাকে। অনেকেই জুনিয়র ইঞ্জিনিয়রের নাম দেখে এই ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার প্রচেষ্টা শুরু করে দেন।

যদিও মঙ্গলবারই দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একটি ভিডিও টুইট করে বলেন, “বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, বাহানাগা স্টেশনের রেলকর্মী নিখোঁজ। এই খবরটি একেবারেই সত্য নয়। ওই স্টেশনের সমস্ত কর্মচারীই তাঁদের কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত রয়েছেন এবং তদন্তে পুরোপুরি সাহায্য করছেন।”

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলিতে ওই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই অবশ্য বিভিন্ন মহলে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, দুর্ঘটনার আসল কারণ না খুঁজে সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র। ওই কর্মচারীর নাম যেহেতু আমির খান, তাই পরিবার-সহ তাঁর নিখোঁজ হওয়ার গল্প ফেঁদে তা প্রচার করানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে।

বালাসোরের কাছে করমন্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা
৪ বছরে লাইনচ্যুত ১১২৭ - রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থায় একাধিক ত্রুটি উল্লেখ করে আগেই রিপোর্ট দিয়েছিল CAG

SUPPORT PEOPLE'S REPORTER

ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in