

কয়লা ঘাটতির দায় এবার সরাসরি কৃষকদের ঘাড়ে চাপালো কেন্দ্র। একদিকে কেন্দ্র বলে আসছে দেশে কয়লার ঘাটতি নেই। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রক বলছে শুধুমাত্র কৃষক আন্দোলনের জেরে ২ লক্ষ টন কয়লা পরিবহন করা যায়নি।
প্রসঙ্গত, লখিমপুর খেরিতে গাড়ি চাপা দিয়ে কৃষক মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের রাজনীতি। কৃষকদের অভিযোগ ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের পুত্রের গাড়ি কৃষকদের চাপা দেয়। তাই সোমবার দেশজুড়ে 'রেল রোকো' কর্মসূচিতে সামিল হয়েছিলেন সারা দেশের কৃষকরা। দাবি ছিল – স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রকে পদত্যাগ করতে হবে। এই আন্দোলনের জেরে সারা দেশজুড়ে রেল পরিষেবা একপ্রকার থমকে যায়।
যদিও দেশ জুড়ে কয়লা ঘাটতি অনেকদিন ধরেই ছিল। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বা সিইএ জানিয়েছিল, ১৬ টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কোনও কয়লা মজুত নেই। ৩০টি কেন্দ্রে মাত্র একদিনের কয়লা মজুত আছে। ১৮টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে দু'দিনের কম কয়লা মজুত রয়েছে। সুতরাং, স্পষ্ট যে ৩৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লা মজুত নেই। কেন্দ্র এই কয়লার চাহিদা বৃদ্ধিকে অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন বলে দাবি করেছিল।
কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী আরকে সিং এবং কয়লা মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশি দাবি করেছিলেন কোনওরকম বিদ্যুৎ সংকট নেই। জোশি বলেছিলেন, কোথাও বিদ্যুৎ সংকট হওয়া নিয়ে কোনও আশঙ্কা তৈরি হয়নি। দেশে চার কোটি ৩০ লক্ষ টন উত্তোলিত কয়লা মজুদ আছে। এই কয়লা দিয়ে ২৪ দিনের বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা যায়।
বৃহস্পতিবার রেলমন্ত্রক জানিয়েছে, ৪৬ টি রেকে ২ লক্ষ টন কয়লা পরিবহণের কথা ছিল বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্টে। কিন্তু কৃষকদের রেল অবরোধের জেরে তা সময়মতো পৌঁছতেই পারেনি। প্রায় ২ লক্ষ টন কয়লা যা দু’দিনের বিদ্যুতের জোগান দিতে পারে একটি রাজ্যে। রেলমন্ত্রকের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী শুধুমাত্র আন্দোলনকারী কৃষকরাই।
সারা ভারত কিষান সভার সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন, ‘যত দোষ, নন্দ ঘোষ। সব কিছুর জন্য কৃষকরাই দায়ী সেটিই প্রমাণ করতে চাইছে কেন্দ্র। দীর্ঘদিন ধরে লেখালেখি হয়েছে, কয়লা সঙ্কট হতে পারে। তখন কোনও সমস্যা হয়নি। কৃষকরা অবস্থানে বসতেই ছবি বদলে গেল?’
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন