
নাবালিকা ধর্ষণ মামলায় প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে সমালোচনার ঝড় আরও বাড়ছে। বিতর্কিত মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে আগেই চিঠি দিয়েছিলেন সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত। এবার প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে খোলা চিঠি লিখলেন মহিলাদের সংগঠন, প্রগতিশীল সংস্থা, সাংবাদিক-সমাজকর্মীদের একাধিক সংস্থা।
এক নাবালিকাকে লাগাতার ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত এক সরকারি কর্মীর আগাম জামিনের আবেদনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে অভিযুক্তের উদ্দেশ্যে বলেন, নির্যাতিতাকে যদি বিয়ে করে নেন তিনি তাহলে আদালত তাঁকে সমস্ত রকম সাহায্য করবে। এমনকি তাঁর চাকরি যাতে না যায়, তাও দেখবে আদালত। অভিযুক্ত যদিও বিবাহিত।
অন্যদিকে সোমবারই আর একটি ধর্ষণের মামলায় বিচারপতি বোবদে বলেন, "স্বামী-স্ত্রী যখন এক ছাদের নীচে দীর্ঘদিন বসবাস করছেন, তখন স্বামী যতই নৃশংস হোন না কেন, তাঁদের মধ্যেকার শারীরিক সম্পর্ককে কি ধর্ষণ বলা উচিত?" প্রধান বিচারপতির এই দুই মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
মহিলা-নাগরিক সংগঠনের তরফ থেকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, এই দুই শুনানির সময় প্রধান বিচারপতির যে মন্তব্য করেছেন তাতে তাঁরা "হতবাক" এবং "ক্ষুব্ধ"। চিঠিতে বলা হয়েছে, "একজন ধর্ষককে আপনি, ভারতের প্রধান বিচারপতি, পরামর্শ দিচ্ছেন নির্যাতিতাকে বিয়ে করার! এর মাধ্যমে আপনি নির্যাতিতাকে গোটা জীবনের জন্য এমন একজন অত্যাচারীর হাতে তুলে দিচ্ছেন, যার কারণে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টার করেছিলেন।"
ধর্ষণের বিচার হিসেবে বিয়ের প্রস্তাবকে "নৃশংসতার চেয়েও জঘন্য" বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে "প্রলোভন", "বিবাহ" এবং "ধর্ষণ"-এর সংজ্ঞার ব্যাখ্যা চেয়েছে মহিলা সংগঠনগুলি।
বৈবাহিক ধর্ষণের মামলায় প্রধান বিচারপতির মন্তব্যের সমালোচনা করে চিঠিতে তাঁরা বলেছেন, "প্রধান বিচারপতির মন্তব্য স্বামীর দ্বারা যৌন, শারীরিক ও মানসিক সহিংসতাকে বৈধতা দেয়। ধর্ষকদের কাছে এটি বার্তা দেয় যে বিবাহ হ'ল ধর্ষণ করার লাইসেন্স।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন