
ফিরছে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল প্রথা। সোমবার কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে একথা জানানো হয়েছে। এবার থেকে পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হলে তবেই পরের ক্লাসে ওঠার সুযোগ পাবে পড়ুয়ারা।
পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনার জন্য ২০১৯ সালে শিক্ষার অধিকার বিল সংশোধন করেছিল মোদী সরকার। কিন্তু বিল পাশ হলেও তা কার্যকর হচ্ছে পাঁচ বছর পর, ২০২৪ সালে। সোমবার শিক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষায় কোনও পড়ুয়া উর্ত্তীর্ণ না হলে, দু’মাসের মধ্যে তাকে পুনরায় পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে। সেই পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ না হলে পড়ুয়া থেকে যাবে ওই শ্রেণীতেই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, দ্বিতীয় বারও কোনও পড়ুয়া পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে, তাকে সহায়তা করবে শ্রেণী শিক্ষকেরা। প্রয়োজনে অভিভাবকদের সঙ্গেও পরামর্শ করা হবে। তবে কোনও ভাবেই স্কুল থেকে বিতাড়িত করা যাবে না কাউকে। কেন্দ্রের এই নয়া নীতি কার্যকর হতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন দেশের ৩০০০ টি-রও বেশি স্কুলে। যার মধ্যে রয়েছে – কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, নবোদয় বিদ্যালয় এবং সৈনিক স্কুলগুলিও।
২০০৯ সালে দেশ জুড়ে প্রণয়ন করা হয়েছিল শিক্ষার অধিকার আইন। সেই আইন অনুসারে, ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী প্রতিটি শিশুর বিনামূল্যে বাধ্যতামূলক শিক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত সমস্ত শিশুর শিক্ষা সম্পূর্ণ করার দায় রাষ্ট্রের। সরকার পরিচালিত কোনও স্কুলে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত থাকবে না পাশ-ফেল প্রথা। তবে পরবর্তী সময়ে এই প্রথার প্রভাব পড়ছিল শিশুদের পড়াশোনার মানে।
এরপর ২০১৮ সালে মোদী সরকার পাশ-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়। ওই বছরই লোকসভায় এবং পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে রাজ্যসভায় গৃহীত হয় সংশোধনী বিল। যদিও স্কুলশিক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে রাজ্যগুলি। ইতিমধ্যেই ১৬ টি রাজ্য এবং দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কেন্দ্রের নীতি অনুযায়ী পাশ-ফেল প্রথা চালু করেছে।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গে ২০২০ সালে পাশ-ফেল প্রথা নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির অধিকাংশ সদস্যই পাশ-ফেল ফেরানোর পক্ষেই মত দিয়েছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব এখনও গৃহীত হয় নি। যদিও গতকাল রাতেই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু দাবি করেছেন, রাজ্যের স্কুলগুলিতে অনেক আগেই পাস ফেল প্রথা চালু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শিক্ষামন্ত্রীর এই দাবি অস্বীকার করেছেন স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষক। তাঁদের মতে, এইরকম কোনও নির্দেশ তাঁদের কাছে আসেনি কখনও।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন