Madhya Pradesh: 'বিশ্বাস নিয়ে এসেছিলাম, ফিরে যাচ্ছি ভয় নিয়ে!' মধ্যপ্রদেশের মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে মৃত ৬

People's Reporter: মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশের সেহোর জেলায় কুবেরেশ্বর ধামে পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যার জেরে গত ৭২ ঘন্টায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
Madhya Pradesh: 'বিশ্বাস নিয়ে এসেছিলাম, ফিরে যাচ্ছি ভয় নিয়ে!' মধ্যপ্রদেশের মন্দিরে পদপিষ্ট হয়ে মৃত ৬
ছবি - সংগৃহীত
Published on

শ্রাবণ মাস উপলক্ষ্যে মধ্যপ্রদেশের সেহোর জেলায় কুবেরেশ্বর ধামে ঢল নেমেছিল ভক্তদের। যার মধ্যে বেশিরিভাগই ছিলেন কাঁওয়ার যাত্রী। কিন্তু সেখানে নেমে এল ভয়ংকর দুর্ঘটনা। পুণ্যার্থীদের ভিড়ে হুড়োহুড়ির জেরে পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় মঙ্গলবার। যার জেরে গত ৭২ ঘন্টায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই দুর্ঘটনায় প্রশাসনিক ব্যর্থতা, অব্যবস্থাপনা এবং মৌলিক অবকাঠামোর অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনার দিন মৃত্যু হয় রাজকোটের যশবন্তী বেন (৫৬) এবং ফিরোজাবাদের সঙ্গীতা গুপ্তা (৪৮) নামক দুই মহিলার। বুধবার মৃত্যু হয়েছে গুজরাটের পাঁচওয়ালের চতুর সিং (৫০) এবং হরিয়ানার রোহতকের ঈশ্বর সিং (৬৫)-এর। এবং সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুরের উপেন্দ্র (২২) এবং রায়পুরের ছত্তিশগড়ের দিলীপ সিং (৫৭)-এর মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার কুবেরেশ্বর মন্দির থেকে কাঁওয়ার যাত্রা বার হওয়ার কথা ছিল। পণ্ডিত প্রদীপ মিশ্রের নেতৃত্বে ওই যাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। এমনিতেই প্রতি বছর শ্রাবণ মাসে কুবেরেশ্বর মন্দিরে পুণ্যার্থীদের ঢল নামে, কাঁওয়ার যাত্রার কারণে তা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এর ফলেই বিপদ ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার থেকেই ভিড় বাড়ছিল। মঙ্গলবার তা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তার জেরে হুড়োহুড়ির সময় পদপিষ্ট হন অনেকে।

এই দুর্ঘটনায় মধ্যপ্রদেশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অন্যদিকে, মঙ্গলবার রাত থেকেই ইন্দোর-ভোপাল জাতীয় সড়কে তীর্থযাত্রীদের কারণে যানজট দেখা দিয়েছে। পুলিশ ভারী যানবাহনের উপর আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা এবং বিকল্প রুটের ঘোষণা করলেও, তা পরিকল্পনা মতো না হওয়ার এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এই প্রসঙ্গে এক সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থায় মন্ত্রী গোবিন্দ রাজপুত স্বীকার করেছেন, "প্রত্যাশার চেয়ে মানুষ অনেক বেশি। ব্যবস্থা ব্যর্থ হচ্ছে। আমি প্রশাসনকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং এই ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে অনুরোধ করছি।"

অন্যদিকে, এই ঘটনায় রাজ্যের শাসক দল বিজেপিকে আক্রমণ করেছে বিরোধী কংগ্রেস। প্রাক্তন মন্ত্রী ডঃ রাজেন্দ্র সিং বলেন, "বিশ্বাস ব্যর্থতাকে সমর্থন করে না। পণ্ডিত প্রদীপ মিশ্র রুদ্রাক্ষ বিতরণ করতে পারেন বা না করতে পারেন, এটি তাঁর পছন্দ। কিন্তু মৃত্যুর দায় কে নেবে? এই বছর কত পরিবার রাখি বাঁধবে তা নিয়ে ভাবছে?"

বিরোধী দলনেতা উমঙ্গ সিং বলেন, "ধর্মের নামে মানুষের জীবন নিয়ে খেলার অধিকার কারও নেই। প্রত্যেকেরই একটি পরিবার আছে। সরকার এবং আয়োজকদের এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এটি একটি সতর্ক সংকেত হওয়া উচিত"।

অন্যদিকে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ পুণ্যার্থীরা। এক পুণ্যার্থীর কথায়, "জল ছিল না, শৌচাগার ছিল না, তাঁরা আমাদের খাবারের জন্য অর্থ প্রদান করেছিল!" তিনি আরও বলেছেন, "কমিটি কিছুই করেনি। মহিলাদের ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল, বয়স্করা পড়ে যাচ্ছিলেন, এবং পুলিশ কেবল তাকিয়ে ছিল। আমরা বিশ্বাসের জন্য এসেছিলাম। ফিরে যাচ্ছি ভয় নিয়ে"।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in