উদলগুড়িতে বিটিসি নির্বাচনের প্রচারে হিমন্ত বিশ্বশর্মা
উদলগুড়িতে বিটিসি নির্বাচনের প্রচারে হিমন্ত বিশ্বশর্মাছবি হিমন্ত বিশ্বশর্মার এক্স হ্যান্ডেল থেকে সংগৃহীত

BTC Election: আসামে বিটিসি নির্বাচনে পর্যুদস্ত বিজেপি, ২৮ আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ বিপিএফ

People's Reporter: নির্বাচনে জয়লাভের জন্য চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তাঁর আক্রমণাত্মক প্রচার সত্ত্বেও বিজেপির এই মুখ থুবড়ে পড়াকে অশনি সংকেত হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল।
Published on

আসামে বোড়োল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিল (বিটিসি) নির্বাচনে পর্যুদস্ত হল বিজেপি। উল্লেখযোগ্যভাবে এনডিএ শরিক বোডোল্যান্ড পিপলস ফ্রন্ট (বিপিএফ)-এর কাছেই হারতে হয়েছে বিজেপিকে। বিধানসভা নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে যে ফলাফল আসামের রাজনীতিতে সুদূরপ্রসারী বলেই মনে করছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। ৪০ আসনের মধ্যে বিপিএফ এককভাবে জয়ী হয়েছে ২৮ আসনে। বিজেপি পেয়েছে মাত্র ৫ আসন। ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল পেয়েছে ৭ আসন।

বিটিসি নির্বাচনে বিজেপির এই মুখ থুবড়ে পড়ায় উত্তর পূর্বে বিজেপির অগ্রগতি কিছুটা হলেও বাধাপ্রাপ্ত হবে। ২০১৬ সালে আসামে ক্ষমতা দখলের পর এই প্রথম এত বড়ো বিপর্যয়ের মুখে পড়লো বিজেপি। যে ফলাফল যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যদিও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা দাবি করেছেন সঙ্গীতশিল্পী জুবিন গর্গ-র আকস্মিক প্রয়াণের প্রভাব পড়েছে নির্বাচনী ফলাফলে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা এবারেও বিটিসি নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে নিঃসংশয় ছিলেন এবং জানিয়েছিলেন গতবারের থেকে এবারের নির্বাচনে বিজেপি আরও ভালো ফল করবে। ২০২১ আসাম বিধানসভা নির্বাচনে এই অঞ্চল থেকেই ১২ আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। এবারের ফলাফলের পর আগামী বছর রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে এই অঞ্চলের ফলাফল কী হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই সংশয়ে বিজেপি।

যদিও এবারের নির্বাচনে জয়লাভের জন্য চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তাঁর আক্রমণাত্মক প্রচার সত্ত্বেও বিজেপির এই মুখ থুবড়ে পড়াকে অশনি সংকেত হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল। কারণ আসাম বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই নির্বাচনকে সেমিফাইনাল হিসেবেই দেখা হয়েছিল।

বিটিসি নির্বাচনে জয়ী বিপিএফের নেতৃত্বে আছেন ৫৬ বছর বয়সী বিদ্রোহী থেকে  রাজনীতির আঙিনায় ফেরা হগরামা মোহিলারী। কোকরাঝাড়ের এক সাধারণ বোড়ো পরিবারে জন্মগ্রহণকারী মোহিলারী যৌবনে ১৯৮৭ সালে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বোড়ো আন্দোলনে যোগ দেন। পশ্চিম আসামে জমি এবং পরিচয় নিয়ে তীব্র সংঘর্ষের সময় তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। তিনি বিদ্রোহী বোড়োল্যান্ড লিবারেশন টাইগার্স (বিএলটি) এর প্রধান হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। এই সংগঠনের সশস্ত্র সংগ্রামে বহু মানুষ নিহত হয়েছিল। ২০০৩ সালের বোড়ো চুক্তির পরে, জঙ্গিবাদের অবসান ঘটিয়ে বিটিসি প্রতিষ্ঠা করে, মোহিলারী সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।

এর আগে ২০২০-র বিটিসি নির্বাচনে বিপিএফ পেয়েছিল মাত্র ১৭ আসন। যদিও এবার বিটিসি নিজেদের ফলাফলে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করে আসনসংখ্যা ২৮-এ নিয়ে গেছে। অন্যদিকে বিজেপি জয়ী হয়েছিল ৯ আসনে এবং ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল জয়ী হয়েছিল ১২ আসনে। ১টি করে আসন পেয়েছিল কংগ্রেস ও গণ সুরক্ষা পার্টি। এর আগের ক্ষমতাসীন জোটের সঙ্গী ছিল বিজেপি, ইউপিপিএল এবং গণ সুরক্ষা পার্টি। এর আগের বিটিসি নির্বাচন হয় ২০২০ সালের ৭ এবং ১০ ডিসেম্বর।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in