খোদ প্রধানমন্ত্রীর কেন্দ্র বারানসীতে দেহ সৎকারে লাগছে ৩৫-৪০ হাজার টাকা, প্রশাসন নির্বিকার
মৃতদেহ পড়ে রইল বাড়িতেই প্রায় ১০ ঘণ্টা। তা আগলে বসে রইলেন বৃদ্ধা মা। করোনা আতঙ্কে আত্মীয়-পরিজন বা প্রতিবেশীরা কেউ এগিয়ে আসেননি। এমনকি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দেখাও মেলেনি। স্থানীয় রামনগর থানার পুলিশ নাকি খবরই পায়নি। এমন অবস্থার চূড়ান্ত নিদর্শন রইল প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীতে। শেষপর্যন্ত কানপুর থেকে মৃতের ভাই এসে ঠেলা গাড়ি করে দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেন।
সোমবারের এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই চরম অব্যবস্থাপনার কটাক্ষ করে বলেছে, রাজ্য চলছে রাম ভরোসে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় অব্যবস্থার অভিযোগ ছিলই যোগী রাজ্যে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শেষকৃত্য করতে না পারার মতো অব্যবস্থা। মণিকর্ণিকা, হরিশচন্দ্র ঘাটে শুধুই চলে টাকার খেলা।
এপ্রিল মাস থেকে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। শ্মশান ঘাটগুলিতে প্রতিনিয়ত মানুষের ভিড় বাড়ছে। দুটি ঘাটে সামান্য কয়েকটি গ্যাসের চুল্লি। ফলে কাঠের চিতায় সৎকার চলছে। গঙ্গার পাড়ে জ্বলছে গণচিতা। ঘাট কর্মী বিক্রম চৌধুরী জানান, হরিশচন্দ্র ঘাটে করোনার দেহ দাহ করতে ৩৫-৪০ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। দেহ বাসের মাচায় বাঁধার জন্য ২০০০ টাকা, ঘাটে দেহ বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৫০০ টাকা পর্যন্ত দর হাঁকাহাঁকি চলছে।
শুধু বারাণসী বা আশেপাশে এলাকার নয়। পূর্ব উত্তর প্রদেশ থেকেও মোক্ষলাভের আশায় কাশিতে আসে শেষকৃত্যের জন্য। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘাটের মুখে বোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। তাতে লেখা, করোনা বা অন্য ধরনের মৃত্যু উভয় ক্ষেত্রে দাহ করতে হলে ৫০০ টাকা, কাঠে পোড়াতে অন্য ক্ষেত্রে ৫০০০ টাকা হলেও করোনার ক্ষেত্রে সাড়ে সাত হাজার টাকা দিতে হবে।
ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, দ্বিগুণ অর্থ বা দিলে কোনও কাজই হচ্ছে না। প্রশাসনও অনুপস্থিত। বাঙালি টোলার বিজেপি কাউন্সিলর চন্দ্রনাথ মুখার্জী ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, নিজে এলাকার লোককেই দরদাম করে ১৩ হাজারের দাহ করেছেন। কুড়ি পঁচিশ হাজার টাকা চাইছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন