
সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস তৃণমূলে যেতেই বিজেপি-বিরোধী জোটে তৃণমূলকে রাখা নিয়ে প্রশ্ন তুললো কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। বিজেপির উদ্দেশ্য পূরণ করছে তৃণমূল বলে দাবি করেছে কংগ্রেস।
সোমবার সকালে নিজের টুইটারে কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গে ঐতিহাসিক জয়ের মাধ্যমে কংগ্রেসের বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার তিন মাসের মধ্যেই বায়রন বিশ্বাসকে কিনে নিয়েছে তৃণমূল। এটা সাগরদিঘি বিধানসভা এলাকার জনগণের রায়ের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা। গোয়া, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং অন্যান্য রাজ্যে এর আগে এইরকম ঘোড়া কেনাবেচার কাজ হয়েছে। এই কেনাবেচা কখনোই বিরোধী ঐক্যকে শক্তিশালী করতে পারবে না। এটা কেবল বিজেপির উদ্দেশ্য পূরণ করছে।“
সোমবার রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলে দিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির কংগ্রেস বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস। তৃণমূলের নব জোয়ার কর্মসূচি চলাকালীন ঘাটালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ঘাসফুলের পতাকা হাতে তুলে নেন বায়রন। এরপরই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেসের পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বও।
সোমবারই সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “দিদি যে দল ভাঙানোর খেলায় সিদ্ধহস্ত, তা সারা ভারত জানে। কিন্তু এক মাঘে শীত যায় না! যে খেলা আপনি শুরু করেছেন, মিলিয়ে নেবেন, সেই খেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আপনিই। আর কিছু দিনের মধ্যেই আপনার দল ভেঙে চৌচির হয়ে যাবে। চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্ট করলাম। কংগ্রেসকর্মীরা দুঃখ পাবেন না।’’
সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছিল বামেরা। বায়রনের কংগ্রেস ছাড়া প্রসঙ্গে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “সাগরদিঘির মানুষ তৃণমূল এবং বিজেপি দুই দলকেই হারিয়েছেন। এই দুই শক্তিকে হারাতে কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করেছিল বামফ্রন্ট। মানুষ এই অবস্থানের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। মমতা ব্যানার্জি মানুষের রায়কে উলটে দিতে চেয়ে বিধায়ক কিনছেন। মানুষের ক্ষোভ এতে আরও বাড়বে।“
তিনি আরও বলেন, অভিষেকের সঙ্গে বায়রনের মিলন হয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের মিলন হয়নি।
বিশিষ্ট আইনজীবী এবং সিপিআইএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তীব্র আক্রমণ করে বলেন, 'হাটে-বাজারে যেমন কিছু মেরুদণ্ডহীন প্রাণী বিক্রি হয় তেমনই বিক্রি হওয়ার নমুনা দেখলাম আমরা। নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহ যে কাজ দেশব্যাপী করেন, তেমনটাই আমরা দেখলাম - জেতা বিরোধী দলের নেতাদের ভয় দেখিয়ে বা পয়সার বলে কিনে নেওয়া। বিজেপি ও তৃণমূল যে একইভাবে গণতন্ত্রের পক্ষে ভয়ঙ্কর, তারই প্রমাণই ফের একবার দেখা গেল।'
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন