
রাজস্থান বিজেপির মুখপাত্র কৃষ্ণ কুমার জানু ওরফে কে কে জানুকে বহিষ্কার করল দল। ছ'বছরের জন্য তাঁকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি। জানা যাচ্ছে, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা প্রয়াত সত্যপাল মালিক এবং প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের বিরুদ্ধে দলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলায় এই পদক্ষেপ।
যদিও বিজেপি রাজ্য শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ওঙ্কার সিং লাখাওয়াত জানিয়েছেন, গত জুনে ঝুনঝুনু জেলা সভাপতি হিসেবে হর্ষিনী কুলহারির নিয়োগের বিরোধিতা করায় তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কারণে তাঁকে ২০ জুন শোকজ নোটিশ জারি করে কারণ দর্শাতে বলা হয়। তবে তিনি সেই নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান ওঙ্কার সিং লাখাওয়াত।
সত্যপাল মালিক এবং জগদীপ ধনকড় - দু'জনেই জাট সম্প্রদায়ের। সম্প্রতি তাঁদের সঙ্গে 'অপমানজনক আচরণ' করার জন্য বিজেপির জাট নেতাদের উপর তীব্র আক্রমণ করেছিলেন। সমাজমাধ্যমে এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার। যেখানে জানুকে বলতে শোনা যায়, সত্যপাল মালিকের মৃত্যুর পর এবং ধনকড়ের আচমকা ইস্তফা নিয়ে তাঁদের প্রতি সরকারের 'তিরস্কার' দেখে তিনি গভীরভাবে হত। তিনি আন সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দলের জাট নেতারা প্রশ্ন তুলুক।
জানু জানিয়েছেন, প্রাক্তন রাজ্যপাল এবং বিজেপির প্রাক্তন জাতীয় সহ-সভাপতি সত্যপাল মালিকের শেষকৃত্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়া দেখা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। জাট সাংসদ, বিধায়ক এবং অন্যান্য দলের সদস্যদেরকে প্রশ্ন করেন, তাঁদের সঙ্গে যে এই আচরণ হবে না ভবিষতে, তাঁরা সেটা কীভাবে বিশ্বাস করেন।
পাশাপাশি, কে আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, যশবন্ত সিনহা, প্রবীণ তোগাড়িয়া, সঞ্জয় যোশী এবং বসুন্ধরা রাজের মতো প্রবীণ নেতাদের দল থেকে দূরে সরানোর জন্য বিজেপির বর্তমান নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন। তিনি দাবি করেন, মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বর্তমান শাসনামলে 'পুতুল' হয়ে গেছেন।
এরপরেই জাট নেতাদের ইতিহাসের বোধকে আকর্ষণ করে জানু উল্লেখ করেছেন, এই সম্প্রদায় পূর্বে সনাতন ঐতিহ্যের অসঙ্গতির বিরুদ্ধে কথা বলেছে। এবং এতে পাশে পেয়েছেন গুরু নানক দেব, জাম্ভোজি মহারাজ এবং দয়ানন্দ সরস্বতীর মতো সংস্কারকদের। সত্যপাল মালিকের শেষকৃত্যে রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুপস্থিতির সমালোচনা করেছেন পরামর্শ দিয়েছেন, এটি সরকারের মধ্যে পক্ষপাত এবং ভয়কে প্রতিফলিত করে।
জগদীপ ধনকড়ের আচমকা পদত্যাগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে জানু জানান, তাঁকে বিদায়ী ভাষণ দেওয়ার সুযোগটাও দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন ধনকড়। এরপরেই জানু ঘোষণা করেন, “একটি অহংকারী সরকারের সাথে সংঘর্ষ করা জাটদের সংস্কৃতি”।
মনে করা হয়েছে রাজস্থান মুখপাত্রের এহেন মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পরেই অস্বস্তিতে পড়েছে দল। এর ফলেই তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে। যদিও দলের পক্ষে অন্য কারণ জানানো হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন