
অক্সিজেন এবং ওষুধের অভাবে করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দিল্লি প্রশাসনকে। এরই মাঝে বেআইনিভাবে প্রচুর পরিমাণে করোনার ওষুধ মজুতের অভিযোগ উঠলো বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীরের বিরুদ্ধে। তাঁর গ্রেফতারির দাবিও তুলেছেন বিরোধীরা।
গত বুধবার এক ট্যুইট বার্তায় নিজের সংসদীয় এলাকা পূর্ব দিল্লিতে বিনামূল্যে কোভিডের ওষুধ 'ফ্যাবিফ্লু' বিতরণ করা হবে জানান প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীর। ট্যুইটে তিনি লেখেন, "পূর্ব দিল্লির বাসিন্দারা সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে এমপি দফতর (২, জাগৃতি এনক্লেভ) থেকে বিনামূল্যে ফ্যাবিফ্লু সংগ্রহ করতে পারেন। অবশ্যই আধার কার্ড এবং প্রেসক্রিপশন আনবেন।"
এরপরই বিতর্কের সূত্রপাত। বিরোধীদের প্রশ্ন, যেখানে হাসপাতালগুলোই ওষুধ পাচ্ছে না, সেখানে গৌতম গম্ভীর কীভাবে এই বিপুল সংখ্যক ওষুধ পেলেন? আরো প্রশ্ন উঠছে, প্রেসক্রিপশন না দেখালে কোনো ওষুধ দোকান থেকেই ওষুধ পাওয়া যায় না, সেক্ষেত্রে এতো ওষুধ এলো কোথা থেকে? তাহলে কি বেআইনিভাবে ওষুধ মজুত করেছে বিজেপি সাংসদ? প্রসঙ্গত, মৃদু উপসর্গের করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ফ্যাবিফ্লু ব্যবহৃত হয়।
দিল্লির শাসকদল আম আদমি পার্টির নেতা রাজেশ শর্মা ট্যুইটারে লেখেন, "এই কারণেই রেমিডিসিভির, ফ্যাবিফ্লু এবং অন্যান্য গুরুতর ওষুধগুলো বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। বিজেপি নেতারা এই ওষুধগুলো মজুত করে রেখেছেন। আমরা গুজরাটেও এমন হতে দেখেছি। এই ধরনের নেতাদের গ্রেফতার করা উচিত।"
অপর এক আপ বিধায়ক সোমনাথ ভারতী গৌতম গম্ভীরকে "ক্রিমিনাল" বলে উল্লেখ করেছেন। ট্যুইটে তিনি লেখেন, "এটা কি অপরাধ নয়? একজন সাংসদ ওষুধ মজুত করে রেখেছেন এবং তাঁর নিজের ইচ্ছেমতো তা দিচ্ছেন। এগুলো হাসপাতালের হাতে তুলে দিচ্ছেন না কেন উনি?"
বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসও। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা ট্যুইটারে গৌতম গম্ভীর ও অরবিন্দ কেজরিওয়াল ট্যাগ করে তিনি লেখেন, "গৌতম গম্ভীর, কত ফ্যাবিফ্লু সংগ্রহ করে রেখেছেন এবং কোথা থেকে এই বিপুল পরিমাণ ফ্যাবিফ্লু পেলেন আপনি? অরবিন্দ কেজরিওয়াল, এটা কি আইনি? বেআইনিভাবে ওষুধ মজুত করে রাখার জন্যই কি দোকানে ফ্যাবিফ্লু পাওয়া যাচ্ছে না?"
দিল্লিতে শেষ ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ৬৩৮ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৪৯ জনের। অধিকাংশ হাসপাতালেই বেড পাওয়া যাচ্ছে না, অক্সিজেনের চূড়ান্ত অভাব রয়েছে। পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ যে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে হাসপাতালগুলো।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন