
রাজস্থানের বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক জ্ঞানদেব আহুজাকে দল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী তিনদিনের মধ্যে শো-কজ নোটিশের জবাব চেয়েছে বিজেপি। অভিযোগ, রামনবমীর দিন মন্দিরের এক অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন রাজস্থানের দলিত কংগ্রেস নেতা টিকারাম জুলি। সোমবার সেই মন্দির প্রাঙ্গণকে গঙ্গাজল ছিটিয়ে শুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন জ্ঞানদেব।
মঙ্গলবার জ্ঞানদেবের এই আচরণের ব্যাখ্যা চেয়ে তাঁকে নোটিশ পাঠিয়েছেন রাজস্থানের প্রবীণ বিজেপি নেতা দামোদর আগরওয়াল। তিন দিনের মধ্যে জবাব তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি, সতর্ক করা হয়েছে তিন দিনের মধ্যে রাজ্য দলের প্রধান মদন রাঠোরের কাছে প্রতিক্রিয়া না পাঠানো হয় তাহলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নোটিশে বলা হয়েছে, “দলের সদস্য পদ নেওয়ার সময় শপথ নিয়েছিলেন জাত, ধর্ম এবং লিঙ্গের মধ্যে কোনও বৈষম্য করবেন না। কিন্তু টিকারাম জুলির মন্দির দর্শনের প্রতিবাদে গঙ্গাজল ছিটিয়েছেন। এই পদক্ষেপ দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে”।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রামনবমীর দিন। সেদিন রাজস্থানের আলওয়ারের একটি মন্দিরে অভিষেক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজস্থান বিধানসভার বিরোধী দলের নেতা তথা আলওয়ার গ্রামীণ থেকে তিনবারের কংগ্রেস বিধায়ক টিকারাম জুলি। এর আগে জ্ঞানদেবকে বলতে শোনা যায়, ‘তাঁর (টিকারাম জুলির) পা মন্দিরের ভিতরে পড়লে এবং দেবতাকে স্পর্শ করলে মন্দির অশুদ্ধ হয়ে যাবে’। এর পরের দিন অর্থাৎ সোমবার মন্দিরকে শুদ্ধ করার জন্য গঙ্গাজল ছিটিয়ে পুজা করেন তিনি।
ভিডিওটি ভাইরাল হতেই শুরু হয় সমালোচনা। বিরোধী কংগ্রেস এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়। যদিও জ্ঞানদেব আহুজা দাবি করেন, তিনি ‘দলিত সমর্থক’। বিজেপি নেতা বলেন, “টিকা রাম জুলির সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। আমিও তার জন্মদিনে তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কংগ্রেস রাম সেতুকে কাল্পনিক বলে, তাহলে তারা মন্দিরে আসে কেন?”
অন্যদিকে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া দিয়ে টিকারাম জুলি বলেছেন, “এটি শুধু আমার বিশ্বাসের উপর আক্রমণ নয়, একটি পদক্ষেপ যা অস্পৃশ্যতার মতো অপরাধকে উত্সাহিত করে। বিজেপি কি দলিতদের এতটাই ঘৃণা করে যে তারা আমাদের ‘পূজা’ করতে দেখতে পারে না? ঈশ্বর কি শুধুমাত্র বিজেপি নেতাদেরই?”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন