
রাজ্যে গোরু চোরাচালান মামলায় টাকা সরানোর জন্য কমপক্ষে তিনটি গোপন কোম্পানীকে ব্যবহার করা হত। কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই) এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এই তথ্য খুঁজে পেয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্র অনুসারে, টাকা সরানোর জন্য তিন ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত তিনটি শেল কোম্পানি ব্যবহার করা হয়েছিল৷
চোরাচালান মামলার তদন্তে এজেন্সিগুলো নতুন যে তিনজনের নাম শনাক্ত করেছে তাঁরা হলেন আবদুল আজিজ, আবদুল হান্নান ও সেলিম হোসেন।
গবাদি পশু চোরাচালান কেলেঙ্কারিতে অর্থের খোঁজ করার সময়, কেন্দ্রীয় সংস্থা তিনটি শেল কোম্পানি খুঁজে পেয়েছে। এই তিন কোম্পানীর নাম যথাহক মার্কেন্টাইল প্রাইভেট লিমিটেড, হক ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড এবং ইএম কনস্ট্রাক্টর প্রাইভেট লিমিটেড। জানা যাচ্ছে, এই সংস্থাগুলো এই কেলেঙ্কারির অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত এনামুল হক দ্বারা চালিত হয়েছিল। যিনি তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনে রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজ (আরওসি) এর রেকর্ড অনুসারে, শনাক্ত করা তিন ব্যক্তিই এই সংস্থাগুলির পরিচালক৷
হক ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড এবং হক মার্কেন্টাইল প্রাইভেট লিমিটেডের ক্ষেত্রে পরিচালকরা হলেন আবদুল আজিজ এবং আবদুল আবদুল হান্নান। অন্যদিকে, ইএম কনস্ট্রাকটর প্রাইভেট লিমিটেডের ক্ষেত্রে আবদুল আজিজ একজন পরিচালক এবং সেলিম হোসেন একজন অতিরিক্ত পরিচালক।
ইডি সূত্র জানিয়েছে যে যদিও কর্পোরেট আইডেন্টিফিকেশন নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং বাণিজ্যের ঘোষিত প্রকৃতি আলাদা, কিন্তু এই সমস্ত সংস্থাগুলির সাধারণ ঠিকানা রয়েছে যা হল এম কে পয়েন্ট, ২৭ বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০০০১। হক মার্কেন্টাইল এবং হক ইন্ডাস্ট্রিজের ক্ষেত্রেও একই ঠিকানায় উল্লিখিত বিল্ডিং-এর রুম নম্বর ৭০৪। তবে, ই এম কনস্ট্রাক্টর প্রাইভেট লিমিটেডের একটি আলাদা রুম নম্বর রয়েছে, যা হল ৬০১।
রেজিস্টার অফ কোম্পানীস-এর রেকর্ড অনুসারে, হক মার্কেন্টাইলের বাণিজ্যের ঘোষিত প্রকৃতি ছিল কাঠামোগত ধাতব পণ্য তৈরি করা, ট্যাংক, জলাধার এবং বাষ্প জেনারেটর। হক ইন্ডাস্ট্রিজ যখন খাদ্য পণ্য তৈরি করে, এবং ইএম কনস্ট্রাক্টর বিল্ডিং মেরামত এবং তৈরির ব্যবসা করে।
কেন্দ্রীয় সংস্থার সূত্রগুলির সন্দেহ, এই তিন সংস্থার জন্য বাণিজ্যের এই ধরনের ঘোষিত প্রকৃতি কেবল চোখে ধুলো দেবার জন্য করা হয়েছিল এবং এই সংস্থাগুলিকে তৈরির আসল উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন গন্তব্যে গবাদি পশু পাচার সহ অবৈধ ব্যবসা থেকে আয়কে অন্য পথে চালিত করা।
এর আগেই বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) কমান্ড্যান্ট সতীশ কুমারের ছেলে ভুবন ভাস্করকে গবাদি পশু চোরাচালানের বাণিজ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি হক ইন্ডাস্ট্রিজে ২০১৫ এবং ২০১৭ সাল থেকে হিসাবরক্ষক হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন। এই সময়েই তাঁর বাবা মুর্শিদাবাদ জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ-এর ৩৬ তম ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন, যা সাধারণভাবে গোরু চোরাচালানের আন্তঃসীমান্তের কেন্দ্রস্থল হিসাবে বিবেচিত হয়।
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন