
‘বুলেটের চেয়ে ব্যালট বেশি শক্তিশালী। গণতন্ত্রে নির্বাচনকে যদি অবাধ ও সঠিক পদ্ধতিতে পরিচালনা করা যায়, তবেই শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের ক্ষমতা মানুষের হাতে থাকবে। তাই, এই নির্বাচন পরিচালনার জন্য দৃঢ়চেতনা-সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনার প্রয়োজন।’ বৃহস্পতিবার, নির্বাচন কমিশনার বাছাইয়ে প্যানেল তৈরির নির্দেশিকা দিতে গিয়ে এমনই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, 'একজন দুর্বল-চিত্তের ব্যক্তি (weak-kneed person)-কে কখনোই নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ করা যায় না। এমনকি, নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে এমন ব্যক্তি কোনও জায়গা পেতে পারেন না। তা হলে গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল হবে।’
বিচারপতি কেএম জোসেফের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘ক্ষমতায় থাকলেই যা খুশি করা যায় না। কাজের স্বাধীনতার সঙ্গে ‘ন্যায় ও অন্যায়ের’ বিষয়টি জড়িত, এবং এটি সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। আর, যে ব্যক্তি ক্ষমতার কাছে মাথানত করে, এমন ব্যক্তিকে কখনই নির্বাচন কমিশনার হিসাবে নিয়োগ করা যায় না।’
আদালত আরও জানিয়েছে, ‘একজন ব্যক্তি যখন নিয়োগকারী ব্যক্তির প্রতি অনুগত থাকেন, তখন তিনি জাতির জন্য কাজ করতে পারেন না। গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত করার জন্য স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনী আচরণ বিধি প্রয়োগ করতে পারেন না তিনি। পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে পড়েন তিনি।’
ভারতীয় সংবিধানের ৩২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সুষ্ঠ ও স্বচ্ছ্ব নির্বাচন প্রক্রিয়া চালানোর জন্য একটি স্বাধীন, সংবিধান স্বীকৃত সংস্থা হল ভারতীয় নির্বাচন কমিশন। আর, এই সংস্থার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং দুইজন কমিশনারকে ছয় বছরের মেয়াদে নিয়োগ করেন রাষ্ট্রপতি। আর, কে হবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সেই বিষয়টি ঠিক করে থাকেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন, সেই বিষয়টিকেই ইঙ্গিত করেছে বিচারপতি কে এম জোসেফ, অজয়রাস্তোগী, অনিরুদ্ধ বোস, হৃষিকেশ রায় এবং সিটি রবিকুমারের সমন্বয়ে গঠিত সাংবিধানিক বেঞ্চ।
বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছে, দেশে অনেক রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় এসেছে। তবে তাদের কেউই নির্বাচন কমিশনের নিয়োগের জন্য আইন/প্রক্রিয়া তৈরি করেনি। সংবিধানের ৩২৪ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে এই বিষয়ে আইন প্রণয়ন করা 'অনিবার্য প্রয়োজনীয়তা'।
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন