
মহাকুম্ভ মেলা উপলক্ষ্যে এবার প্রয়াগরাজে যেন বিলাসবহুল গাড়ির মেলা বসেছে। সে গাড়িগুলো আবার সাধারণ মানুষের না, গাড়িগুলোর মালিক বিভিন্ন আখড়ার সাধুরা। এই তালিকায় রয়েছে – ১৯৬৫ সালের রোলস রয়েস, অডি, মার্সিডিজ বেঞ্চজ এসইউভি, ল্যান্ড রোভার থেকে শুরু করে ফোর্ড এনডেভর, টয়োটা ফরচুনা, ইনোভা, মহিন্দ্রা জাইলো সহ নানা বিলাসবহুল গাড়ি। ২৫ লক্ষ থেকে শুরু করে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে সন্ন্যাসীদের সংগ্রহে। যদিও আখড়ার অধিকাংশ সাধুর দাবি, এই গাড়িগুলি তাঁদের নয়। পীঠধীশ্বর, মহা মণ্ডলেশ্বর, মণ্ডলেশ্বর, মোহন্ত পদে থাকা প্রবীণ সন্ন্যাসীদের।
এই সব বহুমূল্য গাড়ি দেখা যাবে সেক্টর-২০ –এর ত্রিবেণী মার্গ ও কালী মার্গে। এই এলাকা তথাকথিত ভিআইপিদের এলাকা। এখান থেকেই বড়সড় পদযাত্রা করে কুম্ভ মেলায় আসেন আখড়ার সদস্যরা। মহাকুম্ভের পদযাত্রার শুরুতে ছিল শ্রী পঞ্চ দশনম জুনা আখড়া ও কিন্নর আখড়া। জুনা আখড়ার মহা মণ্ডলেশ্বর পবিত্রানন্দ গিরি ১৯৬৫ সালের সাদা রংয়ের রোলস রয়েস চেপে পদযাত্রায় অংশ নেন।
কুম্ভ মেলায় আরেকটি লক্ষণীয় বস্তু হল, সাধুরা যে গাড়িগুলি চড়ে মেলাস্থলে এসেছেন, সেগুলির বেশিরভাগেরই রং সাদা না হয় গেরুয়া। এই রঙ দুটোর সঙ্গে হিন্দু ধর্মের সম্পর্ক গভীর বলে মনে করেন অনেকে। এছাড়া, গাড়িগুলোতে লাগানো নেমপ্লেট। তাতে সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় সংগঠনের নাম, সাধুদের নাম, সংগঠনের কোন পদে রয়েছেন, সেই সমস্ত তথ্য লেখা রয়েছে।
তবে অনেক ক্ষেত্রেই গাড়ি ভাড়া নেন আখড়ার সদস্যরা। তার জন্য ৫ লক্ষ টাকা করে দিতে হয় ভাড়া প্রতিদিন। তবে সাধুদের নিজস্ব গাড়িও রয়েছে। যেমন – শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সদস্য স্বামী বাসুদেবানন্দ পদযাত্রায় দুটি রোলস রয়েস নিয়ে হাজির ছিলেন। যার দাম ২০ কোটি টাকা। এছাড়া, তুলসী পীঠের প্রধান জগৎগুরু রামভদ্রাচার্যের কাছে রয়েছে গেরুয়া রংয়ের অডি। যার দাম ৫০ লক্ষ টাকার বেশি। নিরঞ্জনী আখড়ার তাঁবুতে রয়েছে কালো মার্সিডিজ।
তবে শুধু বিলাসবহুল গাড়ি নয়। ভ্যানিটি ভ্যানে চড়েও কুম্ভ মেলায় এসেছেন শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। দেড় কোটির এই ভ্যানিটি ভ্যান তাঁর গুরু প্রয়াত শঙ্করাচার্য স্বরূপানন্দ সরস্বতীকে উপহার দিয়েছিলেন এক উদ্যোগপতি।
এবিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আখড়ার এক সাধুর কথায়, বিভিন্ন আখড়ায় এই ধরণের দামি গাড়ি থাকে। সেখানকার সাধুরাই এই সব বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করেন। আবার অনেক সময় ভক্তরাও এই সব উপহার দেন। সবমিলিয়ে মহাকুম্ভ মেলায় ত্যাগ ও বিলাসিতা মিলেমিশে একাকার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন