

জেলবন্দি বিধায়ক অখিল গগৈয়ের মানসিক সমস্যা রয়েছে। এই কারণ দেখিয়ে বিধানসভা অধিবেশনে তাঁকে অংশ নিতে দিলেন না আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা। বিধানসভায় তিনি জানিয়েছেন, অখিল গগৈয়ের মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী কর্মী তথা দলীয় বিধায়ক অখিল গগৈয়ের বিধানসভা অধিবেশনে অংশ নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছিল কংগ্রেস। রাজ্যপালের ভাষণের ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে জবাব দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের এই অনুরোধ প্রত্যাখান করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "অখিল গগৈ মানসিকভাবে সুস্থ নন। ওনাকে সেকথা জানানো হয়েছে। উনি সাইকোলজিক্যাল সমস্যাতে ভুগছেন। মানসিক ভারসাম্যহীনতার ও মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছে ওনার।"
তিনি আরো বলেন, "সেদিন উনি বিধানসভায় এসেছিলেন। কোভিড প্রোটোকল অমান্য করে হাউসের প্রত্যেক সদস্যের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। এটি রোগের পূর্ব-লক্ষণ। গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা আমায় জানিয়েছেন, এটাই ওনার রোগ। আমি চিকিৎসকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, ওনাকে তো সম্পূর্ণ সুস্থ-স্বাভাবিক লাগছে, তাহলে ওনাকে আপনারা হাসপাতালে রাখছেন কেন? এতে কি ওনার কোনো সাহায্য হচ্ছে? তখনই চিকিৎসকরা বললেন, এটাই ওনার রোগ।"
প্রসঙ্গত, গত ২১ মে, তিনদিনের বিধানসভা অধিবেশনের প্রথম দিন, আরটিআই কর্মী তথা রাজনীতিবিদ গগৈ বিশেষ এনআইএ আদালতের অনুমতি নিয়ে বিধায়ক হিসেবে শপথ নিতে বিধানসভা এসেছিলেন। শপথ গ্রহণের কিছুক্ষণ পরেই রাজ্যের প্রত্যেক মন্ত্রী ও বিধায়কের কাছে গিয়ে নমস্কার করে বা করমর্দন করে তাঁদের অভিনন্দন জানিয়েছিলেন তিনি।
এই ঘটনার কথায় উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কংগ্রেস বিধায়ক ভরত নারহকে তাঁর প্রশ্ন, এরকম একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে কীভাবে বিধানসভায় প্রবেশের অনুমতি দিতে পারেন তিনি। ভরত নারহ বিধানসভা অধিবেশনে গগৈয়ের অংশগ্রহণের জন্য স্পিকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে অখিল গগৈকে গ্রেফতার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ। গত বছর করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। বর্তমানে জুডিশিয়াল কাস্টডিতে রয়েছেন তিনি। জেলবন্দি থাকা অবস্থাতেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শিবসাগর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হন তিনি এবং জয়লাভ করেন।
২১ মে বিধায়ক হিসেবে শপথ নেওয়ার জন্য বিধানসভায় আসার পর নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে চূড়ান্তভাবে হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। স্পিকার বিশ্বজিৎ দইমারির কাছেও সেদিন এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁর হেনস্থার প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার ভিডিও সহ এক ট্যুইট করেছিলেন জিগনেশ মেভানী।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন