

হেফাজতেই সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুর একদিন পর ভীমা কোরেগাঁও মামলার সমস্ত জেলবন্দী অভিযুক্তদের মুক্তির দাবিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি লিখলেন বিরোধী রাজনীতিবিদরা। এই তালিকায় রয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি প্রধান শরদ পাওয়ার, তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন সহ ১০টি বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রধান।
চিঠিতে লেখা হয়েছে, "যারা স্ট্যান স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা তৈরি করেছে, তাঁকে কারাগারে আটকে রেখে অমানবিক আচরণ করেছে, সেই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আপনি 'আপনার সরকারকে' নির্দেশ দিন, ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে এই বিষয়ে আপনার তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের জন্য আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি। দোষীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতেই হবে। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় সমস্ত জেলবন্দীদের, রাজনৈতিক বন্দীদের, UAPA-দেশদ্রোহের মতো কঠোর আইনের অপব্যবহার করে জেলে আটকে রাখা সমস্ত বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।"
দশ বিরোধী নেতার স্বাক্ষর করা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, "হেপাজতে স্ট্যান স্বামীর মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকস্তব্ধ আমরা, নিচে স্বাক্ষরিত বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা, তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে এই চিঠি লিখছি আপনাকে।"
চিঠিতে তাঁরা জানিয়েছেন, পার্কিনসন সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত ৮৪ বছরের স্ট্যান স্বামীকে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে অস্বীকার করা হয়েছিল। এমনকি একটি চটি ও স্ট্র-এর জন্য তাঁকে আদালতে তিনবার আবেদন করতে হয়েছিল। কোভিডের বাড়াবাড়ির সময়েও তাঁকে উপযুক্ত পরিষেবা দেওয়া হয়নি। মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে একাধিকবার জামিনের আবেদন করা সত্ত্বেও জামিন পাননি তিনি।
বোম্বে হাইকোর্টে আরো একবার জামিনের মামলা চলাকালীন সোমবার দুপুর দেড়টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন স্ট্যান স্বামী। গত বছর অক্টোবর মাসে রাঁচিতে তাঁর বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে এনআইএ। এলগার পরিষদ মামলায় UAPA আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। শারীরিক অবস্থার চূড়ান্ত অবনতি হওয়ায় গত ২৮ মে বোম্বে হাইকোর্টের নির্দেশে একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে ১৫ দিন চিকিৎসা করার সুযোগ পান আজীবন গরীবদের জন্য লড়ে যাওয়া স্ট্যান স্বামী। পরে সেই মেয়াদ বাড়ানো হয়, এমনকি অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিতও করা হয়। সোমবার একটি বেসরকারি হাসপাতালেই মারা যান তিনি।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন