রাজীব হত্যাকারীদের মুক্তি দেওয়া উচিত, মত মৃত্যুদন্ডের শাস্তি দেওয়া প্রাক্তন বিচারপতির
৩১ বছর পর রাজীব গান্ধীর হত্যাকারী এ জি পেরারিভালনকে মুক্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার, শীর্ষ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি কে টি থমাস। একইসঙ্গে তিনি রাজীব হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকলেরই মুক্তির সপক্ষে মত প্রকাশ করেছেন। তাৎপর্যপূর্ণভাবে, ১৯৯৯ সালে প্রাক্তন বিচারপতি কে টি থমাস-ই রাজীব হত্যাকাণ্ডে পেরারিভালনের মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি বহাল রেখেছিলেন।
১৯৯১ সালের ২১ মে, তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুরে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রাণ হারান রাজীব গান্ধী। আর এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ১৯৯৯ সালের ১১ মে পেরারিভালনের যাবজ্জীবনের সাজা বহাল রাখেন তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কে টি থমাসের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। সেসময় থেকেই জেলের ভিতরেই একটানা ২৩ বছর জীবন কাটিয়েছেন তামিলনাড়ুর বাসিন্দা পেরারিভালন। এর মাঝে কেন্দ্রে একাধিক সরকার এসেছে, গেছে। কংগ্রেসের জায়গায় এসেছে বিজেপি সরকার। সঙ্গে ভাগ্য বদলেছে রাজীব হত্যাকারী পেরারিভালনের। কারাগার থেকে স্থায়ী মুক্তি পেয়েছেন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘রাজীব হত্যাকাণ্ডের সকল আসামিকে মুক্তি দেওয়া উচিত।'
এদিন, তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি কে টি থমাস। এদিন তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে পেরারিভালানের মুক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তামিলনাড়ু মন্ত্রিসভা। কিন্তু, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল তা কেন কার্যকর করেননি, এই বিষয়টি আমাকে অবাক করেছে। যেখানে, সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপালের ভূমিকা হল মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করা। তিনি একাকী স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন না।
জানা যাচ্ছে, চলতি বছরের ৯ মার্চ, পেরারিভালানকে জামিনে মুক্তি দেয় শীর্ষ আদালত। এসময় আদালতের তরফে জানানো হয়, গত ৩০ বছরে জেলবন্দি থাকাকালীন কোনও অপরাধমূলক ঘটনা ঘটায়নি পেরারিভালান। এমনকি, প্যারোলে জেলের রাইরে থাকাকালীন কোনও অপরাধমূলক কাণ্ড ঘটাননি তিনি। পরে এই সমস্ত প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে লেখা আবেদন পত্রেই নিজের মুক্তির দাবি করেন পেরারিভালান।
যদিও এর আগে, ২০০৮ সালে তামিলনাড়ু সরকার তার মুক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তারপর শুরু হয় আইনি পদক্ষেপ। বিষয়টিকে বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়। এরপর এই হাইভোল্টেজ মামলার শুনানির পর ১০ মে, রায় স্থগিত রাখে সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায় আজ প্রকাশ্যে এল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন