শুক্রবার বিহারের বেশ কয়েকটি জেলায় অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ তীব্রতর হয়েছে। যেখানে আন্দোলনকারীরা রেলের সম্পত্তির ক্ষতি করার পাশাপাশি একাধিক জায়গায় বিজেপি নেতৃত্ব এবং তাঁদের সম্পত্তির দিকে আক্রমণ শানিয়েছে।
পশ্চিম চম্পারণ জেলায় আন্দোলনকারীরা বিজেপি বিধায়ক বিনয় বিহারির ওপর হামলা চালায় এবং তার মাহিন্দ্রা বোলেরো এসইউভি ভাঙচুর করে। তিনি লরিয়া থেকে তার জন্মস্থানের দিকে যাচ্ছিলেন।
আক্রান্ত হবার পর বিনয় বিহারী সাংবাদিকদের জানান, "হাতে লাঠিসোঁটা ধরে থাকা প্রায় ২০০ জন আন্দোলনকারী আমার এসইউভিটি আটকে দেয় এবং গাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙে দেয়। আমার দুজন সশস্ত্র প্রহরী আছে। কিন্তু তারা ওই পরিস্থিতিতে অসহায় ছিল। আন্দোলনকারীরা মোদীজিকে গালিগালাজ করছিল।"
বিনয় বিহারী ছাড়াও, আন্দোলনকারীরা পশ্চিম চম্পারণের জেলা সদর দপ্তর বেতিয়া শহরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সঞ্জয় জয়সওয়ালের বাড়িতে হামলা চালায়। বিক্ষোভকারীরা তার সম্পত্তি ভাঙচুর করে।
আন্দোলনকারীরা বেতিয়া শহরে উপমুখ্যমন্ত্রী রেণু দেবীর বাড়িতেও ভাঙচুর চালায়। তাঁর বাড়িতে পাথর নিক্ষেপ করা হয় এবং সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়।
সমস্তিপুরে বিজেপি বিধায়ক বীরেন্দ্র যাদবের বাড়িতে হামলা চালায় কিছু আন্দোলনকারী। তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়ে মারা হয়।
বিক্ষোভ ক্রমশ হিংসাত্মক রূপ নেবার পর ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে বিজেপি বিধায়কদের পরিবারের বেশিরভাগ সদস্য প্রতিবেশী এবং আত্মীয়দের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
শুক্রবার বিহারের রাজধানী পাটনাতেও পৌঁছেছে অগ্নিপথের উত্তাপ। আন্দোলনকারীরা দিদারগঞ্জে পাটনা-বখতিয়ারপুর চার লেন রোড টোল প্লাজা লক্ষ্য করে এবং একটি টোল কিয়স্কে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া পাটনা কলেজে অশোক রাজপথে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখায় বহু আন্দোলনকারী।
পাটনার বাইরে দানাপুরে, আন্দোলনকারীরা সগুনা মোড় থেকে দানাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত মিছিল করে। তারা শহরের একাধিক বাসে হামলা চালিয়ে জানালার কাঁচ ভেঙে দেয়।
আন্দোলনকারীরা পাটনা জেলার ফতুহা রেলওয়ে স্টেশনে রাজগীর-ফতুহা মেমো যাত্রীকে আগুন ধরিয়ে দেয়। আন্দোলনকারীদের হামলায় তিনটি কোচ সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
রোহতাসে, বিক্ষোভকারীরা সাসারাম টোল প্লাজায় আগুন ধরিয়ে দেয়। সাসারাম টোল প্লাজা এন এইচ ১৯-এ অবস্থিত। এই রাস্তা নয়াদিল্লি থেকে কলকাতাকে সংযুক্ত করে। এখানে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে।
সুপলে, সহিংস বিক্ষোভকারীরা সহরসা-ললিতগ্রাম প্যাসেঞ্জার ট্রেনে (০৫৫১৬ ডাউন) আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনে একটি ইঞ্জিন ও একটি কোচ পুড়ে গেছে।
ভোজপুরে, বিক্ষোভকারীরা কুলহারিয়া রেলওয়ে স্টেশনে পাটনা-সাসারাম প্যাসেঞ্জার ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় দুটি কোচ ভস্মীভূত হয়েছে।
সমস্তিপুরে, আন্দোলনকারীরা দ্বারভাঙ্গা-নয়াদিল্লি ক্রান্তি এক্সপ্রেস ট্রেনের চারটি বগি পুড়িয়ে দিয়েছে। এই ট্রেন দিল্লি যাচ্ছিল। ট্রেনটি সমস্তিপুর স্টেশনে পৌঁছালে একদল জনতা সেখানে হামলা চালায়। তারা যাত্রীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে একাধিক কামরাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
- with inputs from IANS
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।