
শেষ ৫ বছরে কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনীতে আত্মহত্যা করেছেন ৮১৯জন সেনা। এই তালিকায় সশস্ত্র সেনা, বায়ুসেনা এবং নৌসেনা সকলেই রয়েছেন। লিখিতভাবে রাজ্যসভার বৈঠকে এই খবর জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় ভাট।
সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, আত্মঘাতী সেনাদের মধ্যে ৬৪২ জন সশস্ত্র সেনাবাহিনীর সৈন্য। ওই সময়ের মধ্যে ২৯ জন ভারতীয় নৌসেনার আত্মহত্যার তথ্য পাওয়া গেছে। সেনাবাহিনীর তরফে সদস্যদের আত্মঘাতী হবার এই ঘটনাকে ‘ফ্রাট্রিসাইড বা ভাতৃহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এত সংখ্যক সেনার আত্মঘাতী হবার বিষয় নিয়ে যথারীতি প্রশ্ন উঠেছে। সেই প্রশ্নেরই জবাবে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় ভাট জানিয়েছেন, চাকরী ক্ষেত্রে যাতে সেনাদের মানসিক চাপ কমে সেই জন্য, সশস্ত্র বাহিনীর তরফে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকেই প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি মানসিক স্বাস্থ্য প্রোগ্রাম পরিচালনা করে আসছে। একইসাথে, কোনও ফোর্স মেম্বারের মানসিক অবসাদ বা আত্মহত্যা করার প্রবণতা রয়েছে কি না, সেটাও তদারকি করা হচ্ছে। এই ব্যাপারে মন-বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনাও করা হয়েছে। যে সমস্ত সেনাদের মধ্যে মানসিক অসুস্থতা লক্ষ্য করা গেছে, তাঁদের প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আর্মির ইউনিট কমান্ডিং অফিসার, রেজিমেন্টাল মেডিক্যাল অফিসার পদক্ষেপ নেন, জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান ও চীন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে মোতায়েন সৈন্যদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং শারীরিক সহনশীলতার উপর প্রভাব পড়ে। আবার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পোস্টিং হওয়া সেনারা বাড়িতে ফিরে পরিবারের নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়, পরিবারের সঠিকভাবে যত্ন নিতে না পারার জন্য চাপের মধ্যে পড়ে। যা থেকে আর্থিক এবং বৈবাহিক সমস্যা দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে সম্পত্তি জনিত সমস্যা নিয়ে বিরোধের ঘটনাও দেখা যায়।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, ছুটি শেষ হবার পর যখন সেনারা ছাউনিতে ফিরে আসেন, তারপর তাঁদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রেজিমেন্টাল মেডিক্যাল অফিসাররা তাঁদের যাবতীয় প্রয়োজনীয় শারীরিক ও মানসিক পরীক্ষানিরীক্ষা করেন।
GOOGLE NEWS-এ আমাদের ফলো করুন