মারিয়ুপোলের অস্তিত্ব প্রায় মুছে গিয়েছে। দক্ষিণ ইউক্রেনের বন্দর শহর ছেড়ে এবার পূর্ব ইউক্রেনে নজর দিয়েছে রাশিয়া। সেখানকার ডনবাস এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এমনটাই জানিয়েছেন।
এদিকে, জেলেনস্কির অভিযোগের বিরুদ্ধে মস্কো সরাসরি মুখ না খুললেও পাল্টা জবাবে মারিয়ুপোলে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে হুঁশিয়ারি দিয়ে অস্ত্র সমপর্ণ করতে নির্দেশ দিয়েছে তারা। তার জন্য রাশিয়ার পক্ষ থেকে রবিবার পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। জেলেনস্কির বাহিনী যদিও এই হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দেয়নি। অস্ত্র-সঙ্কট, ফুরিয়ে আসা রসদ, দীর্ঘ যুদ্ধের ক্লান্তি— সব প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, কিয়েভ যেভাবে এসব অঞ্চলে এতদিন ভয়ঙ্কর অত্যাচার চালিয়েছে, তার বহু প্রমাণ রয়েছে মস্কোর হাতে। যাঁরা অস্ত্র সমর্পণ করবেন, তাঁদের নিরাপত্তা দেব আমরা।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের পূর্বদিকে রুশ ভাষাভাষীর মানুষের সঙ্খ্যাই বেশি। অথচ রুশ ভাষার স্বীকৃতি কেড়ে নিয়েছিল ইউক্রেন সরকার। সাথে সাথে অতি-দক্ষিণপন্থী 'অ্যাজভ ব্যাটেলিয়ন' - যারা ইউরোপে নব্য-নাৎসি হিসাবে পরিচিত তাদের হাতে রুশ ভাষাভাষীর মানুষরা অত্যাচারিত হয়েছে বলেও বিস্তর অভিযোগ।
অন্যদিকে, ডনবাসে আসন্ন হামলার আশঙ্কায় বাসিন্দাদের দ্রুত সরানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ডনবাসের বাসিন্দাদের নিরাপদ করিডরের মাধ্যমে শহর ছাড়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে রাশিয়া। অন্যদিকে, আমেরিকা জানিয়েছে, ডনবাস এলাকায় রুশ হামলার মোকাবিলায় ইউক্রেনকে সাহায্য করতে তারা প্রস্তুত। ৮০ কোটি ডলারের নৌ-সাহায্য পাঠাতে পারে হোয়াইট হাউজ।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখলের পর পূর্ব ইউক্রেনের ডনবাস আর লুহানস্ক এলাকায় রুশপন্থীরাও ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার লড়াই চালাতে শুরু করে। গোটা ডনবাস ও লুহানস্ক প্রদেশের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা রুশপন্থীদের দখলে চলে যায়। এবার রাশিয়ার নজর গোটা প্রদেশ। ইতিমধ্যেই মারিয়ুপোলের পতন হয়েছে। লুহানস্ক প্রদেশের ক্রেমিনা শহরও এখন রুশ নিয়ন্ত্রণে। এছাড়াও একাধিক শহর দখলের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।