হোয়াইট হাউসের অদূরে শুটআউট! আশঙ্কাজনক দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্য, অভিযুক্ত আফগানিস্তানের নাগরিক

হোয়াইট হাউসের অদূরে চললো এলোপাথাড়ি গুলি। বৃহস্পতিবার ভোরে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) হোয়াইট হাউস থেকে মাত্র দুই ব্লক দূরে ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন দুই ন্যাশনাল গার্ড সদস্য। সন্দেহজনক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গেছে। গার্ডদের চালানো গুলিতে তিনিও আহত হয়েছেন। তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অভিযুক্তের পরিচয় প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গেছে, অভিযুক্তের নাম রহমানুল্লা লাকানওয়াল। ২৯ বছর বয়সী এই যুবক আফগানিস্তানের নাগরিক বলে জানা গেছে। এই ঘটনার পরই আফগান নাগরিকদের আমেরিকায় ঢোকা বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

হোয়াইট হাউসের উত্তর-পশ্চিমে মাত্র দু’টি ব্লক দূরে এই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের দিকে এগিয়ে এসে আচমকা বন্দুক বার করে গুলি চালাতে শুরু করেন অভিযুক্ত যুবক। পাল্টা গুলি চালান গার্ডরা। অভিযুক্ত এবং দুই গার্ড – তিনজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক।

ওয়াশিংটনের মেয়র মুরিয়েল বাউসার বলেছেন, ‘‘এটি একটি পরিকল্পিত হামলা ছিল। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

এই ঘটনার কড়া নিন্দা জানিয়ে ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লেখেন, “যে পশু ন্যাশনাল গার্ড কর্মীদের গুলি করেছে, তাকে এর চড়া মূল্য চোকাতে হবে।“ এই মুহূর্তে ওয়াশিংটনে নেই ট্রাম্প। ফ্লরিডায় রয়েছেন তিনি।

এরপর অভিযুক্তের পরিচয় প্রকাশ্যে এলে ট্রাম্প বলেন, “মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটি দফতর নিশ্চিত যে, সন্দেহভাজন যুবক বিদেশি। তিনি আফগানিস্তান থেকে এসেছিলেন, যে দেশটি বিশ্বে নরককুণ্ড বলে পরিচিত।“ তাঁর মতে, এই ঘটনা শুধু সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপই নয়, বরং মানবতাবিরোধী অপরাধ।

এই ঘটনার জন্য পরোক্ষে পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনকে দায়ী করে ট্রাম্প আরও বলেন, “২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে বাইডেন প্রশাসন বিমানে করে ওই ব্যক্তিকে এ দেশে ঢুকিয়েছিল। এখন থেকে আমরা আফগানিস্তান থেকে আমেরিকায় আসা সমস্ত ভিনগ্রহীকে আবার পরীক্ষা করে দেখব।“

জানা গেছে, ২০২১ সালে অপারেশন ‘অ্যালাইস ওয়েলকাম’-এর সময় আমেরিকা আসেন অভিযুক্ত যুবক। থাকছিলেন ওয়াশিংটনের বেলিংহামে। মার্কিন সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে কাজ করেছিলেন। তবে তার গুলি চালানোর কারণ এখনও জানা যায়নি।

এই ঘটনার পরই সমস্ত আফগান নাগরিকের অভিবাসনের আবেদনের প্রক্রিয়াকরণ বন্ধ করে দিয়েছে আমেরিকা। মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন বিভাগের তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ‘‘নিরাপত্তা এবং যাচাইকরণের বিধি নতুন করে পর্যালোচনা না হওয়া পর্যন্ত আফগান নাগরিকদের অভিবাসন সংক্রান্ত সমস্ত আবেদনের প্রক্রিয়াকরণ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ রাখা হচ্ছে। এই মুহূর্ত থেকেই এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে। আমাদের মাতৃভূমি এবং আমেরিকার জনগণের সুরক্ষাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’’

এই ঘটনার পর ওয়াশিংটনের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। আরও ৫০০ জন ন্যাশনাল গার্ড সদস্যকে মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।