‘অখণ্ড ভারত’-এর মানচিত্রে নেপালের ‘লুম্বিনি’ আসলে সম্রাট অশোকের সাম্রাজ্যের বিস্তারকে চিত্রিত করে। নয়া সংসদ ভবনে প্রদর্শিত ‘ম্যুরাল’ বিতর্কে এমনই দাবি করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
গত ২৮ মে, নয়া সংসদ ভবন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুরু থেকেই তা নিয়ে ছিল বিতর্ক। তবে সেই বিতর্ক ছিলে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এবার, সেই বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ করেছে ‘ম্যুরাল’ বিতর্ক।
নয়া সংসদ ভবনে প্রাচীন ভারতের মানচিত্রের একটি ম্যুরাল স্থাপন করেছে মোদী সরকার। সেই ম্যুরালে তুলে ধরা হয়েছে ‘অখণ্ড ভারত’-এর সংকল্প। সেই মানচিত্রে প্রাচীন ভারতের ভৌগোলিক এলাকা হিসাবে দেখানো হয়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার এবং থাইল্যান্ডকে। এমনকি, নেপালে গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান ‘লুম্বিনি’ নগরকেও দেখানো হয়েছে ম্যুরালিতে। আর, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নেপালের রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ।
নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বাবুরাম ভট্টরাই (Baburam Bhattarai) এক বিবৃতিতে বলেন, 'সম্প্রতি উদ্বোধন করা ভারতের নতুন সংসদ ভবনে ‘অখণ্ড ভারত’-এর বিতর্কিত ম্যুরাল নেপাল সহ প্রতিবেশী দেশ ও অঞ্চলে অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকারক কূটনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে। ভারতের অধিকাংশ নিকটবর্তী প্রতিবেশীদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যে আস্থার ঘাটতি রয়েছে, এই ঘটনা সেটি আরও বাড়িয়ে দেওয়ার শঙ্কা সৃষ্টি করেছে।'
এই ম্যুরাল বিতর্ক দুই দেশের মধ্যে 'অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকারক কূটনৈতিক বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে' বলে মন্তব্য করেছেন নেপালের আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি (KP Sharma Oli)।
বর্তমানে ভারত সফরে রয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল ‘প্রচন্ড’। এই পেক্ষাপটে নয়া সংসদ ভবন থেকে ম্যুরালটি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য প্রচন্ডকে পরামর্শ দিয়েছেন নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিরোধী দল CPN-UML-এর নেতা কেপি শর্মা ওলি।
ম্যুরাল প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, 'এটা ন্যায্য নয়। বিশ্বের কাছে ভারত নিজেকে একটি প্রাচীন এবং শক্তিশালী দেশ হিসাবে উপস্থাপন করে। গণতন্ত্রের মডেল হিসাবে তুলে ধরে। এই রকম একটি দেশ যদি নেপালের অঞ্চলগুলিকে তাদের মানচিত্রের অন্তর্ভুক্ত করে এবং সেই মানচিত্র সংসদ ভবনে স্থাপন করে, তবে তাকে ন্যায্য কাজ বলা যায় না।'
সম্প্রতি, নতুন সংসদ ভবনে স্থাপিত ম্যুরালের চিত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা। তারপরই বিতর্ক শুরু হয়।
টুইটারে সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী লেখেন, 'সংকল্প স্পষ্ট - অখন্ড ভারত'। মুম্বাই উত্তর-পূর্বের বিজেপি সাংসদ মনোজ কোটক লিখেছেন, 'নতুন সংসদে অখন্ড ভারত। এটি আমাদের শক্তিশালী এবং আত্মনির্ভর ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে।'
GOOGLE NEWS-এ Telegram-এ আমাদের ফলো করুন। YouTube -এ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন।