

পেগাসাস স্পাইওয়্যার কাণ্ড নিয়ে তদন্ত শুরু করল ফ্রান্স। যদিও ভারতের পক্ষ থেকে আড়িপাতার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। বিশ্বের ১৭টি সংবাদমাধ্যমের যৌথ অনুসন্ধানে সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বিজ্ঞানী, সমাজকর্মীদের ফোনে আড়িপাতার বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। পেগাসাসের নির্মাতা এনএসও সংস্থার একটি তালিকা অনুসন্ধানে হাতে এসেছে। তার মধ্যে ভারতের ৪০ জন সাংবাদিকের নাম রয়েছে। রয়েছে ফ্রান্সের সাংবাদিকদের নামও। এর মধ্যে মিডিয়াপার্ট সংস্থার উপরেও নজরদারির অভিযোগ রয়েছে। তারা অভিযোগ করায় ফরাসি সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এই মিডিয়াপার্ট প্রথম রাফালে নিয়ে আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছিল। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ফ্রান্সে সরকারিভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে। ফ্রান্সের পত্রিকার লা মঁদে জানিয়েছে, ফরাসি প্রসিকিউটরের অফিস তদন্ত শুরু করতে রাজি হয়েছে। তাদের অভিযোগ মরক্কোর বিরুদ্ধে। মরক্কো নিয়ে তাদের একাধিক তদন্ত রিপোর্ট দেশের সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার হাই কমিশনার মিচেল বেচলেটও জানান, যে অভিযোগ উঠেছে, তা অংশত সত্য হলেও তার সব নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করেই হয়েছে।
তবে তারা সত্যি সত্যি পেগাসাসের দ্বারা সংক্রমিত হয়েছেন কিনা, তা ফোনের ফরেনসিক রিপোর্টে জানা যাবে। ভারত সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে এই তালিকায় নাম রয়েছে ভারতে কর্মরত বিদেশি কূটনীতিকদের। চিন, ইরান, নেপাল, আফগানিস্তানের কূটনীতিকদে ফোনেও স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছে।
ভারতে ২০১৭ সাল থেকে স্পাইওয়ার ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০১৭ সালে ইজরাইল সফরে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ বৈঠক হয়। ইজরায়েল সরকারের অনুমতি নিয়ে পেগাসাস তাদের স্পাইওয়ার বিক্রি করে বলে অভিযোগ। ভারতে ২০১৭ থেকে স্পাইওয়ার ব্যবহার করা হচ্ছে, ২০২১ পর্যন্ত তার বিস্তার লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
'দ্য ওয়ার' ওয়েবসাইট জানিয়েছে, নজরদারির তালিকায় রয়েছেন উমর খালিদ, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, বনজোৎস্না লাহিড়ী, আম্বেদকর বাদী অশোক ভারতী, রেলকর্মী আন্দোলনের নেতা শিব কুমার মিশ্র, দিল্লি অঞ্জনি কুমার, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সরোজ গিরি, ছত্রিশগড়ের শুভ্রাংশু চৌধুরী। রহস্য বেড়েছে দেশের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ভাইরোলজিস্ট গগনদীপ কাঙের নাম থাকায়।
পর্যবেক্ষকদের মতে, যেভাবে নজরদারি চালানো হয়েছে, তা কোনও বেসরকারি সংস্থার পক্ষে চালানো অসম্ভব বটে। পেগাসাসকে যে কোন মোবাইল ফোনে সন্তর্পণে ঢুকিয়ে সব তথ্য, কথোপকথন বের করে আনা যায়। বিপুল ব্যয়সাপেক্ষ এই স্পাইওয়ার ব্যবহার নিয়ে আগেও অভিযোগ উঠেছে।
ভারতের প্রয়োজন নিরপেক্ষ এবং প্রশ্নমুখী সাংবাদিকতা — যা আপনার সামনে সঠিক খবর পরিবেশন করে। পিপলস রিপোর্টার তার প্রতিবেদক, কলাম লেখক এবং সম্পাদকদের মাধ্যমে বিগত ১০ বছর ধরে সেই চেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে। এই কাজকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন আপনাদের মতো পাঠকদের সহায়তা। আপনি ভারতে থাকুন বা দেশের বাইরে — নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে একটি পেইড সাবস্ক্রিপশন নিতে পারেন। স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন