
মহামারী নিয়ন্ত্রণে বিশ্বে সবথেকে খারাপ দেশপ্রধানদের মধ্যে অন্যতম হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। 'দ্য কনভারসেশন' নামক প্রতিষ্ঠানের এক অনলাইন ভোটিং-এ এরকমই তথ্য উঠে এসেছে। এই সংস্থার সঙ্গে জড়িত বড় অংশের শিক্ষাবিদরা। একদিকে যখন বিধ্বংসী রূপ নিচ্ছে মহামারী, তখন মহামারী নিয়ন্ত্রণের হিসাব নিকেশ নিয়ে বসে গিয়েছেন একদল শিক্ষাবিদ। এর মধ্যে কিছু বর্তমান দেশপ্রধান রয়েছেন, আবার কিছু প্রাক্তনও রয়েছেন। মহামারী নিয়ন্ত্রণে একটু সচেতনতাই যখন অনেকটা কাজ করে থাকে, তখন সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিধিনিষেধগুলো এই দেশপ্রধানরাই অনেকসময় লঙ্ঘন করেছেন। করোনা নিয়ন্ত্রণে যাঁদের ভূমিকা অত্যন্ত খারাপ বলে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।
নরেন্দ্র মোদি: গত বছরের পর ভারতই এখন করোনা মহামারি এপিসেন্টারে পরিণত হয়েছে। মে মাসেই প্রত্যেকদিন ৪ হাজার মানুষের সংক্রমণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। যদিও এই ভয়াবহতার সঠিক তথ্য তুলে ধরা সম্ভব এখনও হচ্ছে না। হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে একের পর এক রোগী মৃত্যু ঘটছে। জীবনদায়ী ওষুধ রেমডেসিভির পাওয়া যাচ্ছে না। অসুস্থরা হাসপাতালে বেডের অভাবে ফিরে যাচ্ছেন। আর দেশের এই অবস্থার জন্য অনেকেই একটি মানুষকে দোষারোপ করছেন। তিনি হলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
জানুয়ারি মাসেই গ্লোবাল ফোরামে মোদি দাবি করেছিলেন, 'করোনা ঠেকাতে ভারত সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে।' মার্চ মাসে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, মহামারী এখন শেষের পথে। আসলে কোভিড ১৯ ভারতে নিজের শক্তি সঞ্চয় করে ফের নতুন রূপে দাপট দেখাচ্ছে। কিন্তু এই ভয়াবহতা আটকাতে মোদির সরকার একেবারে প্রস্তুত ছিল না। বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে এপ্রিল মাসে দলীয় সদস্যদের সঙ্গে মিলে জোরদার আউটডোর প্রচার সেরেছেন মোদি। সামাজিক দূরত্ব, মাস্কের বালাই ছিল না এই প্রচারগুলোতে। তারওপর ধর্মীয় সমাবেশ তো রয়েইছে। অবশেষে জনস্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে মেনে নেওয়া হয়েছে, এই ধর্মীয় সমাবেশ 'বৃহত্তর ভুল' ছিল।
জায়ের বোলসোনারো: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বোলসোনারো কোভিড ১৯-কে 'সাধারণ জ্বর' বলে গুরুত্ব না দেওয়ায় ভয়াবহ মহামারীর মুখ দেখতে হয়েছিল দেশটিকে। নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি আরও গম্ভীর করে তুলেছিলেন। ধর্মীয় স্থানে মাস্ক পরে যাওয়ার উপর বিধিনিষেধ চালু করে দেশে মহামারী ডেকে এসেছিলেন তিনি।
আলেকজান্ডার লুকাশেনকো: বেলারুসের একনায়কতন্ত্র নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেনকো কোভিডের ভয়াবহতাকে কখনই মানতে চাননি। মহামারীর শুরুর দিকে যখন অন্যান্য দেশ লকডাউন করছিল, তখন লুকাশেনকো সংক্রমণ আটকাতে কোনওরকম বিধিনিষেধের পক্ষে ছিলেন না।তাঁর নিদান ছিল, ভদকা পান করে, মাঠে কাজ করে ভাইরাসকে দূরে রাখা সম্ভব।
ডোনাল্ড ট্রাম্প: ক্ষমতায় না থাকলেও মহামারি নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্পের ভ্রান্ত নীতির কারণে দীর্ঘ সময়ের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ভুক্তভোগী হতে হয়েছে। মহামারীকে উপেক্ষা করে মাস্ক পরা ও করোনা চিকিৎসা নিয়ে ভুল প্রচার করে সার্বিকভাবে দেশের ক্ষতি করেছেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন