
রাজনৈতিক টালমাটালে দক্ষিণ কোরিয়া। সে দেশের প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল সামরিক আইন (মার্শাল ল) লাগু করা নিয়ে বেজায় বিপাকে পড়েছেন। সামরিক আইন চালু করার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই প্রবল বিক্ষোভের মুখে তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার।
মঙ্গলবার গভীর রাতে জাতির উদ্দেশ্যে এক ভাষণে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল সামরিক আইন (মার্শাল ল) ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘কমিউনিস্ট বাহিনী’-র থেকে জাতিকে রক্ষা করতে এবং রাষ্ট্রবিরোধীদেরকে দমন করতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণ। বিরোধী রাজনৈতিক দল, শ্রমিক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন, এমনকি সামরিক বাহিনীও রাষ্ট্রপতির এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে।
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কোরিয়ায় চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সামরিক আইন জারি হয়নি। প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পরেই রাজনৈতিক উত্তেজনা শুরু হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি ইউন সুক-ইওল-র দল পিপলস পাওয়ার পার্টি এবং প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ‘স্বৈরাচারী’ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতিকে ‘ইম্পিচমেন্ট’ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
মঙ্গলবার মার্শাল ’ল জারির পরে প্রেসিডেন্ট ভবন সামরিক বাহিনী ঘিরে রেখেছিল। নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল প্রেসিডেন্ট ভবন। সবকিছু উপেক্ষা করে বিরোধী দলগুলি বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। ব্যারিকেড অতিক্রম করেন আইনসভাতে প্রবেশ করে বিরোধী দলের আইনপ্রণেতারা। রাজধানী সিওলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান হাজার হাজার মানুষ। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হয় একাধিক জায়গায়।
উল্লেখ্য, সামরিক আইন জারি হওয়ার পরেই বিরোধী দলের এক সদস্য এর বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে প্রস্তাব তোলেন। ৩০০ সদস্যের মধ্যে ১৯০ জন এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। এমনকি প্রেসিডেন্টের দলের অনেক সদস্যই এই প্রস্তাবের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। ফলে ‘মার্শাল ল’ চালু হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই তা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। তবে এখানেই থেমে নেই বিরোধীরা। ৭২ ঘন্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্টকে বরখাস্ত (ইম্পিচমেন্ট) করার জন্য ভোটাভুটির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন